বাদ্য বাজিয়ে রাতে আসবে বরযাত্রী। বাড়িতে আত্মীয়স্বজনের ভিড় বাড়ছে। সবাই বিয়ের আয়োজন নিয়ে ব্যস্ত। এ অবস্থায় এক ব্যক্তি (৪৬) তাঁর বাড়িতে স্ত্রী না থাকায় আলু ভর্তা করে দিতে বিয়ের পাত্রী মাদ্রাসাছাত্রীকে (১৮) বাড়িতে ডেকে আনেন।
সেখানেই তাঁকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। পরে ছাত্রীর চিৎকারে গ্রামবাসী ছুটে এলে পালিয়ে যান ওই ব্যক্তি।
বিয়ের কথা মাথায় রেখে ধর্ষণের ব্যাপারটি পুরোপুরি চেপে যায় তাঁর পরিবার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ঘটনাটি জানাজানি হলে মেয়েটির বিয়ে ভেঙে যায়।
ঘটনাটি ঘটেছে গত শনিবার সকালে দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার চণ্ডীপুর ইউনিয়নে। মেয়েটি ওই এলাকায় একটি মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী।
মেয়েটির দাদি জানান, ঘটনার দিন রাতে ওই এলাকায় বিষয়টি মীমাংসার জন্য এক সালিস বৈঠক ডাকা হয়। বৈঠকে অভিযুক্ত আবদুর রহমানকে দুই লাখ পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন সালিসের মুরব্বিরা। জরিমানার বিষয়টি শুনে সালিসেই জ্ঞান হারান ওই ব্যক্তি। ফলে তাঁকে রাতেই পার্বতীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
মেয়েটির দাদি বলেন, ‘গ্রামবাসী চাঁদা তুলে এতিম মেয়েটির বিয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন। কিন্তু আবদুর রহমান আমার নাতনির সব শেষ করে দিয়েছে। আমি এর বিচার চাই।’
রোববার দুপুরে ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রীর মা পার্বতীপুর মডেল থানায় অভিযুক্ত আবদুর রহমানকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। পুলিশ আবদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে দিনাজপুর কারাগারে পাঠায়। মেয়েটিকে রোববার বিকেলে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
চণ্ডীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য জাহাঙ্গীর আলম জানান, ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রীর শনিবার রাতে বিয়ের কথা ছিল। কিন্তু অভিযুক্ত আবদুর রহমান ওই দিন সকাল ১০টায় তাঁকে বাড়িতে আলু ভর্তা করে দেওয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে পালিয়ে যান।
এ নিয়ে পার্বতীপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইমাম জাফরের সঙ্গে সোমবার কথা হয়। তিনি জানান, এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে ধর্ষণ মামলা করেছেন। অভিযুক্ত আবদুর রহমানকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মেয়েটিকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।