লৌহজং নদের ভাঙনের কবলে পড়েছে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার গুণটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি ভবন। ছবিটি মঙ্গলবার বিকেলের
লৌহজং নদের ভাঙনের কবলে পড়েছে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার গুণটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি ভবন। ছবিটি মঙ্গলবার বিকেলের

ভাঙনের কবলে বিদ্যালয়

বিলীন হচ্ছে টিনশেড, দোতলা ভবনও ঝুঁকিতে

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় লৌহজং নদের ভাঙনের কবলে পড়েছে গুণটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি ভবন। ইতিমধ্যে ভবনের একটি কক্ষ নদে ভেঙে পড়েছে। পাশের দোতলা একটি ভবনও ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে।

উপজেলার জামুর্কী ইউনিয়নের গুণটিয়া গ্রামে বিদ্যালয়টির অবস্থান। এর পাশ দিয়ে বয়ে গেছে লৌহজং নদ। নদের তীরবর্তী এলাকায় টিনশেড ভবনটি অবস্থিত। তিন কক্ষের ওই ভবন ছাড়াও বিদ্যালয়টির দোতলা একটি ভবন রয়েছে। অন্য একটি একতলা ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা করায় সেখানে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটিতে আড়াই শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে।

মঙ্গলবার বিকেলে গিয়ে দেখা যায়, টিনশেড ভবনের উত্তর পাশের কক্ষটি নদে প্রায় বিলীন। করোনা পরিস্থিতির কারণে বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। গুণটিয়া গ্রামের বাসিন্দা সামছুল হক (৬৫) বলেন, ‘এইখানে তিনটি কক্ষ আছিল। কয়েক দিন আগে প্রচুর বৃষ্টি হয়। সেই বৃষ্টি আর বন্যার পর পানি কমার পর স্কুলের ভবনের উত্তর পাশের বাঁশঝাড় নদের বিলীন হয়। দু-তিন দিন আগে স্কুলটির ঘরও ভাঙে। অহন যে অবস্থা হইছে, তাতে ওই ঘরটা মনে হয় আর থাকব না। ছেলেমেয়েরা কনে ক্লাস করব, তা নিয়া চিন্তায় পইরা গেছি।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে গুণটিয়া গ্রামের তিনজন বাসিন্দা জানান, বিদ্যালয়–সংলগ্ন এলাকায় নদের উত্তর পাশ ছাড়াও আশপাশ থেকে প্রতিবছর শুকনো মৌসুমে নদের পাড় ও তলদেশ থেকে মাটি কাটা হয়। কয়েক বছর ধরে এ অবস্থা চলছে। তবে প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয় না। এ বছর নদে পানি আসার আগে মাটি কাটা হয়েছিল।
বিদ্যালয়টির সাবেক শিক্ষার্থী গল্লি জনতা উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাঈম হোসেন বলে, ‘আমি এই স্কুলে পড়ছিলাম। যে ঘর ভাঙছে, সেখানে ক্লাস করছি। অহন খুবই খারাপ লাগতাছে।’

যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে, তাতে মনে হয় ভবনটি থাকবে না। ভাঙনরোধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় ব্যাঘাত ঘটবে। বিদ্যালয়ের মাঠের পূর্ব পাশে দোতলা ভবন রয়েছে। ওই ভবনটিও ভাঙনের কবলে পড়তে পারে।
শিরীন আক্তার, সভাপতি, বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি

বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি শিরীন আক্তার বলেন, ‘যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে, তাতে মনে হয় ভবনটি থাকবে না। ভাঙনরোধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় ব্যাঘাত ঘটবে। বিদ্যালয়ের মাঠের পূর্ব পাশে দোতলা ভবন রয়েছে। ওই ভবনটিও ভাঙনের কবলে পড়তে পারে। এ জন্য আমরা খুবই দুশ্চিন্তায় রয়েছি।’
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি আমরা জেনেছি। এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’