দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার কাটলা ইউনিয়নকে ভিক্ষুকমুক্ত ঘোষণা করেছেন জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল আলম। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে কাটলা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চত্বরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ২৬ জন ভিক্ষুকের পুনর্বাসনের জন্য কারও হাতে নতুন ঘরের চাবি, কারও কাছে রিকশাভ্যানের চাবিসহ চাহিদা অনুযায়ী সরকারি সুবিধা তুলে দেন জেলা প্রশাসক।
বিরামপুরকে ভিক্ষুকমুক্ত করতে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তৌহিদুর রহমান কাটলা ইউপিতে ওই ইউনিয়নের সব ভিক্ষুককে ডেকেছিলেন। তাঁদের সন্তান ও স্বজনদেরও ডেকেছিলেন তিনি।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খায়রুল আলম, ওসি মো. মনিরুজ্জামান, ভাইস চেয়ারম্যান মেসবাউল আলম, উম্মে কুলসুম, কাটলা ইউপির চেয়ারম্যান নাজির হোসেন প্রমুখ।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ২৯ জন ভিক্ষুকের মধ্যে একজন মারা গেছেন। দুজন অন্যত্র চলে গেছেন। ২৬ জনের মধ্যে ছয়জনকে নতুন টিনের ঘর, ছয়জনের সন্তানকে রিকশাভ্যান, বিধবা ভাতা, বয়স্কভাতা, ভিজিডি, কৃষি প্রণোদনা, শিক্ষা বৃত্তিসহ বিভিন্ন ধরনের সরকারি সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
ইউএনও তৌহিদুর রহমানের এ পদক্ষেপ নিয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রথম আলো অনলাইনে ‘মা–বাবার ভিক্ষাবৃত্তি, ইউএনওর কাঠগড়ায় সন্তানেরা’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। গত ২ মার্চ ‘তাহলে কতটা এগোল বাংলাদেশ’ শিরোনামে উপসম্পাদকীয় প্রকাশিত হয়।
২৮ ফেব্রুয়ারির পর কাটলা ইউনিয়নের ২৯ জন ভিক্ষুকের বাড়ি বাড়ি যান ইউএনও। প্রত্যেকের সমস্যার কথা শোনেন। একই সঙ্গে সন্তানদের ডেকে মা–বাবার ভরণপোষণের আইনের বাধ্যবাধকতা জানিয়ে দেন। একই সঙ্গে সন্তানদের কী ধরনের সুবিধা দেওয়া হলে বৃদ্ধ মা–বাবাকে ভরণপোষণ দেওয়া যাবে, তার একটি চাহিদা তৈরি করেন। এরপর জানো বালা, খির বালা, নিদ বালাসহ বেশির ভাগ ভিক্ষুকের সন্তানেরা তাঁদের মা-বাবাকে ভরণপোষণ দেওয়া শুরু করেন।
অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মাহমুদুল আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত বাংলাদেশ গড়ার যে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন, ভিক্ষুক পুনর্বাসন সেই কার্যক্রমের অংশ।
ইউএনও তৌহিদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সন্তানদের অবহেলায় বৃদ্ধ মা–বাবার ভিক্ষাবৃত্তি সামাজিক অবক্ষয়ের কারণ।