সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজ কর্তৃপক্ষ বিনা রসিদে ভর্তি ফরম বিতরণ করে উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণিতে ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছে। এ ছাড়া ভর্তি বাবদ সরকারিভাবে নির্ধারিত ফির চেয়ে শিক্ষার্থীপ্রতি ৪০০ টাকা বেশি নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সব মিলে ভর্তি–ইচ্ছুক প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে সরকার–নির্ধারিত ফির চেয়ে এক হাজার টাকা বেশি খরচ করতে হচ্ছে।
এই কলেজে এ বছর উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণিতে সাধারণ কোটায় বিজ্ঞান বিভাগে ৩০০ জন, মানবিক বিভাগে ১৫০ ও বাণিজ্য বিভাগে ২৫০ জন ছাত্রছাত্রী ভর্তি করা হবে। এ ছাড়া প্রতিবন্ধী, মুক্তিযোদ্ধা ও পোষ্য কোটায় আরও প্রায় ৫০ জন ভর্তি করা হবে। ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে ভর্তি ফরম বিতরণসহ ভর্তির কার্যক্রম শুরু হয়েছে, যা ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে।
ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ, ভর্তি ফরম বাবদ প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৫০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এর কোনো রসিদ দেওয়া হচ্ছে না। তা ছাড়া সরকারিভাবে জেলা পর্যায়ের কলেজগুলোতে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থী প্রতি সর্বোচ্চ দুই হাজার টাকা গ্রহণের বিধান করে দেওয়া হলেও এই কলেজের কর্তৃপক্ষ তা মানছেন না। এখানে ভর্তির জন্য ২ হাজার ৪০২ টাকা করে থোক নেওয়া হচ্ছে। এই টাকা কোন কোন খাতে নেওয়া হচ্ছে, তা–ও জানানো হচ্ছে না।
কয়েকজন ভর্তি-ইচ্ছুক ছাত্রছাত্রী অভিযোগ করেছে, ৫০০ টাকা দিয়ে ভর্তি ফরম গ্রহণের সময় তারা রসিদ চাইলে ফরম বিতরণের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা তাদের ধমক দিয়ে সরিয়ে দেন।
কলেজের একটি সূত্র জানিয়েছে, শুধু উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণিতে নয়, এই কলেজের স্নাতক-স্নাতকোত্তর—সব শ্রেণিতেই ভর্তির সময় ফরম বাবদ বিনা রসিদে ৫০০ টাকা নেওয়া হয়ে থাকে।
প্রতিটি কলেজে ছাত্রছাত্রী ভর্তির জন্য নিজস্ব কিছু নীতিমালা রয়েছে। এই নীতিমালার আলোকে কলেজ কর্তৃপক্ষ বিশেষ কোনো খাতে কিছু টাকা নিতে পারে। কিন্তু তা অবশ্যই রসিদের মাধ্যমে হতে হবে।অধ্যাপক মকবুল হোসেন, চেয়ারম্যান, রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড
এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ টি এম সোহেল রসিদ ছাড়া টাকা গ্রহণের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, কলেজে প্রায় ৮০ জন অনিয়মিত (মাস্টাররোল) কর্মচারী রয়েছেন। তাঁদের কলেজের নিজস্ব আয় থেকে বেতন–ভাতা দিতে হয়। এ কারণে ভর্তি ফরম বাবদ কিছু টাকা নেওয়া হয়। তা ছাড়া এই টাকা থেকে ভর্তি–ইচ্ছুক ছাত্রছাত্রীদের একটি করে কলম ও এক কপি করে কলেজের মুদ্রিত নিয়মাবলি সরবরাহ করা হয়েছে।
যোগাযোগ করলে রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মকবুল হোসেন বলেন, প্রতিটি কলেজে ছাত্রছাত্রী ভর্তির জন্য নিজস্ব কিছু নীতিমালা রয়েছে। এই নীতিমালার আলোকে কলেজ কর্তৃপক্ষ বিশেষ কোনো খাতে কিছু টাকা নিতে পারে। কিন্তু তা অবশ্যই রসিদের মাধ্যমে হতে হবে। তাঁর মতে, আর্থিক বিধিমালা মোতাবেক রসিদ ছাড়া একটি টাকাও গ্রহণের সুযোগ নেই।