ঈশ্বরগঞ্জে সপ্তম ধাপে ১১টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সব কটি ইউনিয়নেই আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী আছেন।
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় ১১টি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থীদের কারণে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন থেকে আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, যুবলীগের কেউ কেউ নিজেদের জনগণের প্রার্থী বা জনগণের চাপে প্রার্থী হয়েছেন বলে দাবি করছেন। তবে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারাসহ নৌকার প্রার্থীরা বলেন, স্থানীয় রাজনীতিতে নানা মতবিরোধের কারণে উপজেলা যুবলীগের নেতাদের মদদে এককাট্টা হয়েছেন ইউনিয়ন যুবলীগের নেতারা। অন্যদিকে মহাজোটের শরিক দল জাতীয় পার্টি (জাপা) আটটি ইউনিয়নে প্রার্থী দিয়েছে। ফলে নৌকার প্রার্থীরা ত্রিমুখী চাপে পড়েছেন।
গত ইউপি নির্বাচনে উপজেলার ১০ ইউপিতে নৌকার প্রার্থীরা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। গতবার একটিতে জাপা প্রার্থী বিজয়ী হন। এবার ১১টি ইউপিতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী দিয়েছে। তবে নির্বাচনে তাঁদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী যুবলীগের নেতারা।
উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্র জানায়, উপজেলার ঈশ্বরগঞ্জ সদর, সোহাগী, সরিষা, আঠারবাড়ী, জাটিয়া, বড়হিত, তারুন্দিয়া, উচাখিলা, রাজীবপুর, মগটুলা, মাইজবাগ ইউপিতে সপ্তম ধাপে ৭ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, ঈশ্বরগঞ্জ সদর ইউপিতে নৌকার প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মো. আবু হানিফা। এখানে স্বতন্ত্র পরিচয়ে ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হয়েছেন ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. হারিছ উদ্দিন আহাম্মদ, ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন মণ্ডল ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. হারুন অর রশীদ।
‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীর কারণ জানতে চাইলে আনোয়ার হোসেন মণ্ডল বলেন, ‘দল আমাকে মূল্যায়ন না করলেও দীর্ঘ দিন মাঠে থাকায় ভোটাররা নিশ্চয়ই মূল্যায়ন করবেন। নৌকার প্রার্থী আবু হানিফার অভিযোগ, নৌকা ঠেকানোর স্বতন্ত্র প্রার্থীকে উপজেলা যুবলীগের নেতারা সমর্থন দিয়ে মাঠে নামিয়েছেন।’
আঠারবাড়ী ইউপিতে নৌকার প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মো. জুবের আলম। এ ইউনিয়নের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আনোয়ার হোসেন সরকার। মুঠোফোনে জানতে চাইলে জুবের আলম অভিযোগ করেন, নৌকার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বলতে গেলে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা যুবলীগ। আনোয়ার হোসেন সরকার জানান, ‘দীর্ঘ দিন ধরে রাজনীতি করছি। তাই ভোটারদের প্রতিনিধি বেছে নেওয়ার অধিকার রয়েছে।’
আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে যুবলীগের নেতাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার বিষয়ে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মো. আবুল খায়ের মুঠোফোনে বলেন, শুধু যুবলীগের নেতারা নয় কোনো কোনো ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতারাও প্রার্থী হয়েছেন। যুবলীগের নেতাদের নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য বলা হয়েছে। কিন্তু তাঁরা কথা শোনেননি। উপজেলা যুবলীগের মদদে নৌকার বিরুদ্ধে প্রার্থী হওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে আবুল খায়ের বলেন, ‘এ ধরনের অভিযোগ আমার জন্য খুবই বিব্রতকর। যাঁরা প্রার্থী হয়েছেন তাঁদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হবে’।
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম জানান, সহযোগী সংগঠনের কেউ কেউ যদি আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের বিরোধিতা করে তাহলে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।