গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় আওয়ামী লীগের বিত্তশালী এক নেতার নামে বয়স্ক ভাতার কার্ড করা হয়েছে। তবে ওই নেতা বলছেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কলাবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান চারু চন্দ্র গাইনের নামে ২০১৮ সালে উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে বয়স্ক ভাতার কার্ড ইস্যু করা হয়েছে। অন্যদিকে ওই ইউনিয়নেই অনেক দরিদ্র ব্যক্তি এখনো বয়স্ক ভাতার কার্ড পাননি। চারু চন্দ্র গাইনের বাবা মৃত চিত্তরঞ্জন গাইনও কলাবাড়ী ইউপির একাধিকবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলাবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ‘চারু চন্দ্র গাইন কলাবাড়ী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান। তাঁর দুই ছেলে। বড় ছেলে চয়ন গাইন ব্যবসা করেন। ছোট ছেলে বিষ্ণু গাইন একটি ব্যাংকে চাকরি করেন। চারু চন্দ্র গাইন পৈতৃক সূত্রে অনেক সম্পদের মালিক। তিনি কীভাবে বয়স্ক ভাতার কার্ড পেলেন, তা আমাদের বোধগম্য নয়।’
এ বিষয়ে জানার জন্য কলাবাড়ী ইউপির চেয়ারম্যান মাইকেল ওঝার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি।
চারু চন্দ্র গাইন বয়স্ক ভাতার কার্ড পাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি কেন বয়স্ক ভাতার কার্ড করব? পুরো বছরে আমি যে ভাতা পাব, তা আমার এক দিনের পকেট খরচও না। কীভাবে আমার নামে বয়স্ক ভাতার কার্ড হয়েছে, তা আমার জানা নেই।’
কলাবাড়ী ইউপির সচিব সুনীল চন্দ্র বাড়ৈ বলেন, ‘কলাবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি চারু চন্দ্র গাইন বয়স্ক ভাতার জন্য নিজে পরিষদে এসে আমার কাছে তাঁর ছবি ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিয়েছিলেন। সে অনুযায়ী আমরা তাঁর কাগজপত্র উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে জমা দিয়েছিলাম। তাঁর আগ্রহেই তাঁর নামে বয়স্ক ভাতার কার্ড হয়েছে।’
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রফিকুল হাসান বলেন, ‘আমি সম্প্রতি কোটালীপাড়া উপজেলায় যোগদান করেছি। আমি আসার পর এখন পর্যন্ত এখানে কোনো ভাতার কার্ড প্রদান করা হয়নি। কার্ড প্রদানে যদি কোনো অনিয়ম হয়ে থাকে, তবে তা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’