সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী হয়ে ভোটারদের কাছে ২০ দফা অঙ্গীকার করেছিলেন বিষ্ণু রায়। শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে হেরে যান তিনি। তবে নাগরিকদের ভোগান্তি নিরসনে সেই ২০ দফা বাস্তবায়নের জন্য নির্বাচিত মেয়রের কাছে তিনি লিখিত দিয়েছেন। মেয়রও গুরুত্ব বিবেচনায় বাস্তবায়নযোগ্য দাবিগুলো বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছেন।
নবনির্বাচিত মেয়রের কাছ পরাজিত মেয়র প্রার্থীর দেওয়া ২০ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে জগন্নাথপুর পৌরসভার মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবনের সামনে থেকে রানীগঞ্জ সড়কের মাছের আড়ত পর্যন্ত সড়কের ফুটপাত দখল মুক্ত করা এবং বাজার পুকুর ভরাট করে পৌর মার্কেট নির্মাণের মাধ্যমে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের স্থানান্তর করা, নলজুর নদীতে বর্জ্য ফেলা বন্ধ করে বর্জ্য ফেলার নিদিষ্ট স্থান নির্ধারণ করা, জগন্নাথপুর বাজারের থানার খালের ঘর বরাদ্দে অনিয়মের তদন্ত করা, জগন্নাথপুর পৌরসভায় ঝাড়ুদারদের সংখ্যা বৃদ্ধি করা, দলিত সম্প্রদায়ের ব্যবসায়ীদের প্রতি অবিচার বন্ধ করে তাঁদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা, পৌরসভায় প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি নিয়ে পৌরসভার উন্নয়নে উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা, পৌরসভার পরিচালনায় একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাস্তবায়ন, পূর্বের মেয়রের কর্মপরিকল্পনা অনুসরণ করা, পৌরসভায় শিশুপার্ক নির্মাণ ও হারুনুর রশীদ হিরন মিয়া স্টেডিয়াম বাস্তবায়ন করা, এক মাসের মধ্যে জরুরি কাজের তালিকা প্রণয়ন করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করা, জগন্নাথপুর পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ সড়কে গুণীজনের নামে ভাস্কর নির্মাণ ও পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ সড়কে সড়কবাতি স্থাপন ইত্যাদি।
জগন্নাথপুর উপজেলার নাগরিক ফোরামের আহ্বায়ক নুরুল হক বলেন, পৌরসভার উন্নয়নে নির্বাচিত মেয়রকে পরাজিত মেয়র প্রার্থীর ২০ দফা দাবি জানানো নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। বিজয়ী মেয়র পৌরসভার উন্নয়নে সবাইকে নিয়ে কাজ করবেন বলে তাঁরা আশাবাদী।
পরাজিত প্রার্থী বিষ্ণু রায় প্রথম আলোকে বলেন, সদ্য সমাপ্ত পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তিনি অংশগ্রহণ করেন। নির্বাচনী প্রচারণায় নাগরিক দুর্ভোগ নিরসনের ২০ দফা অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছিলেন। নির্বাচনে পরাজিত হওয়ায় নবনির্বাচিত মেয়রকে ২০ দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য লিখিত দিয়েছেন। তিনি আশা করছেন, নবনির্বাচিত মেয়র নাগরিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দাবিগুলো বাস্তবায়ন করবেন।
জগন্নাথপুর পৌরসভায় মেয়র আক্তার হোসেন বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেন, পরাজিত মেয়র প্রার্থী বিষ্ণু রায়ের ২০ দফা দাবি পেয়েছেন। গুরুত্ব বিবেচনায় বাস্তবায়নযোগ্য দাবিগুলো বাস্তবায়ন করা হবে।
গত ১৬ জানুয়ারি জগন্নাথপুর পৌর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মিজানুর রশীদ ভূঁইয়াকে পরাজিত করে স্বতন্ত্র প্রার্থী আক্তার হোসেন মেয়র নির্বাচিত হন।