অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পর দালালদের তদবিরে অর্থের বিনিময়ে আবার সংযোগ দেওয়া হয়।
বগুড়ার ধুনট উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন মিলিয়ে ফসলের মাঠে বিদ্যুৎ–চালিত প্রায় ১ হাজার ৫০০ সেচপাম্প আছে। এর মধ্যে ৮০ ভাগই অবৈধ। এমন তথ্য দিয়েছেন খোদ উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম)। তাঁর ভাষ্য, নিয়মিত অভিযান চালিয়ে এসব সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। কিন্তু কৃষকদের অভিযোগ, এসব অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার এক ঘণ্টা না যেতেই আবার সংযোগ দেওয়া হয়।
সম্প্রতি এমন ঘটনা নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন নিমগাছি ইউনিয়নের কয়েকজন সেচপাম্পের মালিক। তাঁদের অভিযোগ, পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তারা অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে কার্যালয়ে ফিরে আসার এক ঘণ্টার মধ্যেই দালালদের তদবিরে অর্থের বিনিময়ে আবার বিচ্ছিন্ন করা লাইনে সংযোগ দেওয়া হয়। অবৈধ সেচপাম্প চলায় বৈধভাবে সংযোগ নেওয়া পাম্পের মালিকদের লোকসানের মুখে পড়তে হয়।
তবে পাম্পমালিকদের এ অভিযোগের বিষয়ে ধুনট পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ের ডিজিএম মাহবুব জিয়া বলেন, দালালদের তদবিরে অর্থের মাধ্যমে আবার সংযোগ দেওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়। তিনি বলেন, পল্লী বিদ্যুতের নীতিমালা অনুযায়ী মিটার স্থাপনের খুঁটি থেকে ১৩০ মিটার দূরত্বের মধ্যে সেচপাম্প স্থাপন করতে হবে। কিন্তু কিছু সেচপাম্পের মালিকেরা বৈধ সংযোগ নিয়ে পরে বাঁশের খুঁটির সাহায্যে ১৩০ মিটারের বেশি দূরে সেচপাম্প স্থাপন করেন। এগুলোর বিরুদ্ধে একাধিকবার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে ফসল নষ্টের কথা বিবেচনা করে বিচ্ছিন্ন কিছু সংযোগ আবার যুক্ত করা হয়েছে।
ইউএনওর কাছে অভিযোগ দেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে বেড়েরবাড়ী গ্রামের কৃষক মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের অবৈধ সেচপাম্পের বিষয়ে ইউএনও ও বিদ্যুৎ অফিসে লিখিত অভিযোগ দেন তিনি। বিদ্যুৎ অফিস সত্যতা পেয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। কিন্তু এর এক ঘণ্টা পর বিদ্যুৎ অফিসের লোকজনই ফিরে এসে আবার সংযোগ দিয়ে যান।
সরুগ্রামের কৃষক এনামুল হক বলেন, একটি সেচপাম্পের অনুমতি নিয়ে তিনটি পাম্প চালানো হয়। অভিযোগ দিয়েও এগুলো বন্ধ করা যায়নি।
বৈধ পাম্পমালিকদের অভিযোগের বিষয়ে ইউএনও সঞ্জয় কুমার মহন্ত বলেন, তদন্তের জন্য তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।