জুড়ীর পূর্ব বটুলি সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি গরু ব্যবসায়ীলাশ দ্রুত ফেরতের দাবিতে স্থানীয় লোকজন বিজিবির ফুলতলা ক্যাম্পের সামনে বিক্ষোভ করেন। এ সময় বিজিবির লোকজন তাঁদের শান্ত করেন। আজ সোমবার দুপুরে
জুড়ীর পূর্ব বটুলি সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি গরু ব্যবসায়ীলাশ দ্রুত ফেরতের দাবিতে স্থানীয় লোকজন বিজিবির ফুলতলা ক্যাম্পের সামনে বিক্ষোভ করেন। এ সময় বিজিবির লোকজন তাঁদের শান্ত করেন। আজ সোমবার দুপুরে

বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশির লাশ ফেরত, এলাকাবাসীর বিক্ষোভ

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়নের পূর্ব বটুলি গ্রামের বাসিন্দা গরু ব্যবসায়ী বাপ্পা মিয়ার (৩০) লাশ ফেরত দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। বিএসএফের গুলিতে নিহত হওয়ার দুই দিন পর আজ সোমবার বিকেলে এ বিষয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক হয়। এরপর বিএসএফ বিজিবির কাছে তাঁর লাশ হস্তান্তর করে। এদিকে বাপ্পার লাশ দ্রুত ফেরত ও সীমান্ত হত্যা বন্ধের দাবিতে দুপুরে এলাকাবাসী বিজিবির স্থানীয় ফুলতলা ক্যাম্পের সামনে বিক্ষোভ করেন।

পূর্ব বটুলি সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশি গরু ব্যবসায়ী বাপ্পা মিয়া

এলাকাবাসী জানান, পূর্ব বটুলি সীমান্তের বিপরীতে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উত্তর ত্রিপুরা জেলা পড়েছে। গরু ব্যবসায়ী বাপ্পা গত শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। ওই দিন দিবাগত রাত চারটার দিকে সীমান্তে কয়েকটি গুলির শব্দ শোনা যায়। পরদিন শনিবার সকালে সীমান্তে ভারতীয় অংশে কাঁটাতারের বেড়ার কাছে একটি লাশ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় লোকজন। খবর পেয়ে স্বজনেরা বিজিবির সহায়তায় ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি বাপ্পার বলে শনাক্ত করেন। এ সময় তাঁর মুখ ও বুকে রক্ত দেখা যায়। এরপর বিএসএফ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভারতের উত্তর ত্রিপুরা জেলার কদমতলা হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়ে দেয়।

এ ঘটনায় শনিবার প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে ‘জুড়ীতে সীমান্তে গরু ব্যবসায়ীর লাশ’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।

আজ বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে পূর্ব বটুলি সীমান্তে পতাকা বৈঠক হয়। পরে লাশ হস্তান্তর করা হয়। এ সময় বিজিবির ৫২ ব্যাটালিয়নের ফুলতলা ক্যাম্পের কমান্ডার সুবেদার দেলোয়ার হোসেন, বিএসএফের ১৬৬ ব্যাটালিয়নের ইয়াকুবনগর ক্যাম্পের কমান্ডার সুরেন্দ্র কুমার, জুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সঞ্জয় চক্রবর্তীসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

জুড়ীর পূর্ব বটুলি সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশি গরু ব্যবসায়ী বাপ্পা মিয়ার লাশ দ্রুত ফেরত এবং সীমান্ত হত্যা বন্ধের দাবিতে স্থানীয় লোকজন বিজিবির ফুলতলা ক্যাম্পের সামনে বিক্ষোভ করেন। আজ সোমবার দুপুরে

শনিবার বিএসএফের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ভারতীয় একটি গণমাধ্যমে প্রচারিত খবরে দাবি করা হয়, বাপ্পাসহ তাঁর সহযোগীরা গরু পাচার করে আনতে কাঁটাতারের বেড়া কেটে অবৈধভাবে ভারতে ঢুকে পড়েন। টের পেয়ে বিএসএফ তাঁদের ধাওয়া করে। একপর্যায়ে তাঁরা বিএসএফ সদস্যদের ওপর হামলার চেষ্টা চালান। এ সময় গুলিতে বাপ্পা ঘটনাস্থলে মারা যান। অন্যরা সটকে পড়েন।

এদিকে আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে স্থানীয় শতাধিক লোক বিজিবির ফুলতলা ক্যাম্পের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় নিহত বাপ্পার পরিবারের সদস্যরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। বিক্ষোভকারীরা বাপ্পার লাশ দ্রুত ফেরত আনাসহ সীমান্ত হত্যা বন্ধের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। পরে বিজিবির লোকজন এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে লোকজন শান্ত হন।

বিজিবির ফুলতলা ক্যাম্পের কমান্ডার সুবেদার দেলোয়ার হোসেন সন্ধ্যা ছয়টার দিকে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, বাপ্পার লাশ তাঁর স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ব্যস্ততার কারণে এ ব্যাপারে আর কোনো মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন এই কর্মকর্তা।