সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ

বিএম কনটেইনার ডিপো পরিদর্শন করল জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি

সীতাকুণ্ড বিস্ফোরণে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে পরে থাকা রাসায়নিকের ছোট ছোট ড্রাম
ফাইল ছবি

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের ঘটনায় জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে কমিটির সদস্যরা কনটেইনার ডিপো এলাকা পরিদর্শনে যান। এ সময় তাঁরা ডিপো কর্তৃপক্ষ, ফায়ার সার্ভিসসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছ থেকে প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করেন। কমিটির সদস্য ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহাদাত হোসেন প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

গত শনিবার রাতে বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৬ জন নিহত ও দুই শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। ঘটনার পরদিন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমান ৯ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন।

ইউএনও মো. শাহাদাত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, দুর্ঘটনায় হতাহতের কারণ অনুসন্ধান, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ, ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না হয়, সে জন্য সুপারিশমালা তৈরি করতে তদন্ত কমিটিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল দুপুরে ডিপো এলাকা পরিদর্শনের সময় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের বক্তব্য রেকর্ড করা হয়েছে। তদন্তকাজ শুরু হয়েছে এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে।

শনিবার রাতে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের পর থেকে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা উদ্ধারকাজ ও আগুন নেভানোর কাজ চালাতে থাকেন। গতকাল বেলা দুইটার দিকে উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করে ফায়ার সার্ভিস। কিন্তু সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত কয়েকটি কনটেইনারের ভেতর থেকে ধোঁয়া উঠছিল। ডিপো কর্তৃপক্ষ কনটেইনারগুলো নামিয়ে এনে ভেতরে থাকা পণ্য বের করছিল এবং পানি দিয়ে নেভানোর চেষ্টা করছিল।

ইউএনও বলেন, এখন ফায়ার সার্ভিসের আগুন নেভানোর মতো আগুন কোনো কনটেইনারে নেই। কনটেইনারগুলোর মুখ খুলে ভেতরে থাকা পণ্যগুলো বাইরে বের করার পর পণ্যগুলো অক্সিজেনের সংস্পর্শে এসে কিছুটা আগুন ধরে। তবে কর্তৃপক্ষ পানি দিয়ে সঙ্গে সঙ্গেই তা নিভিয়ে ফেলেছে।

প্রসঙ্গত, তদন্ত কমিটির প্রধান হলেন জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার উপপরিচালক উপসচিব বদিউল আলম। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন সীতাকুণ্ড সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুল করিম, ইউএনও মো. শাহাদাত হোসেন, শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মো. জসিম উদ্দিন, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সজীব কুমার চক্রবর্তী, কলকারখানা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপমহাপরিদর্শক আবদুল্লাহ আল সাকিব মুবাররাত, চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ফেরদৌস আনোয়ার ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্সের চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক মো. ফারুক হোসেন ও চট্টগ্রামের বিস্ফোরক পরিদর্শক মো. তোফাজ্জল হোসেন। কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।