সকাল থেকেই পুরো আখড়াবাড়ি কানায় কানায় ভরে যায় সাঁইজির শত শত ভক্ত, অনুসারীতে। ফকির লালন শাহের তিরোধান দিবস ছিল কাল, তাই তাঁদের এই আগমন।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যা থেকে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় লালন আখড়াবাড়িতে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী লালন মেলা ও সংগীতানুষ্ঠান। লালন অনুসারী ও ভক্তরা মূলত নিজেদের মতো সাধুসঙ্গ করছেন। গানে গানে স্মরণ করছেন ভাবের গুরুকে।
২২ বছর ধরে এই আখড়াবাড়িতে আসছেন গাজীপুর থেকে এনাম সাঁই। সঙ্গে আসেন তাঁর ঘরনি শামসুন্নাহারসহ কয়েকজন। বিকেলে আখড়াবাড়ির পাশেই একতারা, দোতারা নিয়ে গানে গানে আশপাশের এলাকা জমিয়ে রেখেছিলেন তাঁরা।
এনাম সাঁইয়ের মতো হাজার হাজার ভক্ত-অনুসারী জড়ো হয়েছেন আখড়াবাড়িতে।
সন্ধ্যার একটু আগে পাঁচদানা চাল বের করে পানি নিয়ে গিলে খেলেন সাধু গুরুরা। অধিবাসের মধ্য দিয়ে শুরু হলো সাধুসঙ্গ।
সাধুরা জানালেন, লালন শাহ চার প্রকারের গান গেয়েছেন, যা সাধুসঙ্গে সাধারণত গাওয়া হয়। সাধুদের মতে, এই তিরোধানে দৈন্য বা আবেদন, প্রার্থনামূলক গান গাওয়া উচিত। তাই গেয়ে উঠলেন, ‘আমি অপার হয়ে বসে আছি ওহে দয়াময়, পাড়ে লয়ে যাও আমায়।’
সন্ধ্যার পর আখড়াবাড়ির আঙিনা একতারা, দোতারা আর ডুগির শব্দে মুখরিত হয়ে ওঠে। রাত আটটায় মুড়ি ও জলযোগ করে শুরু হয় পূর্ণ পাত্রে আগমনী অর্থাৎ অনুষ্ঠান।
সন্ধ্যায় কালী নদীর পাড়ে মঞ্চে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের সাংসদ মাহবুব উল আলম হানিফ তিন দিনের আয়োজনের উদ্বোধন করেন।
লালন একাডেমির আয়োজনে ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় জেলা প্রশাসক মো. আসলাম হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় কুষ্টিয়া-১ আসনের সাংসদ আ ক ম সরওয়ার জাহান, কুষ্টিয়া-৪ আসনের সাংসদ সেলিম আলতাফ, পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাতসহ আওয়ামী লীগের নেতারা বক্তব্য দেন।