বুক চাপড়ে কাঁদছেন বাবা রাজ্জাক হাওলাদার। হতবিহ্বল ছোট দুই ভাই ফোরকান ও লিটন হাওলাদার। অ্যাম্বুলেন্সের সঙ্গে আসা স্ত্রী মোসা. আখিনুর আহাজারি করছেন আর বলছেন, ‘গ্রামের বাড়িতে বসতঘর করা অইলো না তাঁর।’
এই আহাজারি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের উত্তর সুলতানাবাদ গ্রামে পোশাক কারখানার কর্মী নজরুল ইসলাম ওরফে নিজামের (৪৫) বাড়িতে। তিনি ৪ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণে অগ্নিদগ্ধ হন।
গত বৃহস্পতিবার বিকেল চারটার দিকে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নজরুল।
নজরুল ৪ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণে অগ্নিদগ্ধ হন। গত বৃহস্পতিবার ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে মারা যান তিনি। আজ শুক্রবার সকালে ঢাকা থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁর লাশ গ্রামের বাড়িতে আনা হয়।
আজ শুক্রবার সকালে ঢাকা থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে নজরুলের লাশ গ্রামের বাড়িতে আনা হয়। এ খবর পেয়ে আত্মীয়স্বজনসহ কয়েক শ লোক সেখানে যায়। এ সময় এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে।
অ্যাম্বুলেন্সের সঙ্গে আসা নজরুলের স্ত্রী আখিনুর বাড়ির লোকদের জড়িয়ে ধরে আহাজারি করছিলেন। তিনি বলেন, এশার নামাজ পড়ে ফেরার কথা বলে বের হওয়া মানুষটা আর ফিরল না।
নজরুলের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকেই বাকরুদ্ধ সত্তরোর্ধ্ব দাদি চানবরু বেগম। হতবিহ্বল হয়ে আছেন ছোট দুই ভাই ফোরকান হাওলাদার ও লিটন হাওলাদার। কারও সান্ত্বনার কথাই শুনছিলেন না নজরুলের ছেলে মনির হোসেন। বুক চাপড়ে কাঁদছিলেন বাবা রাজ্জাক হাওলাদার।
রাজ্জাক হাওলাদার বলেন, ‘আমার নিজামের কী অইছে। নিজামেরে আইনগা দাও। পোলায় আমার বসতঘর করবে, জমি চাইছিলে। আমি জমি দেহাইয়া দিছি। সবাইরে কইছি, ও যেই হানে ঘর করতে চাইবে, হেই জমিটাই ওরে দিমু।’
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, লাশের কাফন ও কফিন বাবদ নজরুলের পরিবারকে সরকারের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। আজ বেলা ১১টায় উত্তর সুলতানাবাদ জামে মসজিদের সামনে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।
নজরুলের দুই সন্তানের মধ্যে বড় মেয়ে রোজিনার বিয়ে দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জেই। ছেলে মনির সেখানে একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন।