বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) বিজ্ঞানীরা ‘বারি-৫’ নামে পেঁয়াজের একটি নতুন জাত উদ্ভাবন করেছেন। এই জাতের পেঁয়াজ প্রতি হেক্টরে প্রায় ১৯ মেট্রিক টন উৎপাদিত হচ্ছে। গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের জাতটি দ্রুত জনপ্রিয় করতে পারলে দেশে আগামী তিন বছরে পেঁয়াজের উৎপাদন ১০ লাখ টন বাড়বে। ফলে পেঁয়াজে বাংলাদেশ হয়ে উঠবে স্বয়ংসম্পূর্ণ।
রোববার মেহেরপুর সদরের কালীগাংনী গ্রামে নতুন উদ্ভাবিত পেঁয়াজের ওই জাতের প্রদর্শনী প্লট উদ্বোধন করা হয়। কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক মন্ত্রণালয় থেকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে এতে অংশ নেন। এ সময় বিশেষ অতিথি ছিলেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ও কৃষিসচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম। এ বছর মেহেরপুরে ১৭৯ জন কৃষক প্রায় ২৫ একর জমিতে ‘বারি-৫’ জাতের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের চাষ করেছেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, পেঁয়াজে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার জন্য কোল্ড স্টোরেজের সুবিধা বাড়াতে হবে অথবা গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়াতে হবে। বিশেষ কোল্ড স্টোরেজে মজুত করতে পারলে পেঁয়াজ নিয়ে সংকট কমত। তবে এতে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যেতে পারে। সে তুলনায় তুলনামূলকভাবে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের চাষ সহজতর ও অধিক সম্ভাবনাময়।
স্বল্প সুদে পেঁয়াজচাষিদের কৃষিঋণ নিশ্চিত করতে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের সমন্বয়ে কমিটি করে দেওয়া হবে উল্লেখ করে আব্দুর রাজ্জাক আরও বলেন, পেঁয়াজ, রসুনসহ মসলাজাতীয় ফসলের চাষে মাত্র ৪ শতাংশ সুদে কৃষকদের কৃষিঋণ দেওয়া হয়। কিন্তু দুঃখজনক হলো, এ কৃষিঋণ প্রকৃত কৃষক পান না। স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এসব কৃষিঋণ নিয়ে অন্য কাজে লাগান।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, মেহেরপুর কৃষিতে সমৃদ্ধ একটি অঞ্চল। এখানকার মাটি খুবই উর্বর হওয়ায় প্রায় সব ধরনের ফসল প্রচুর ফলে। অন্য ফসলের পাশাপাশি পেঁয়াজের ফলনও অনেক। দেশে পেঁয়াজের ঘাটতি পূরণে এ অঞ্চল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তাই স্বল্প খরচে যেন অধিক পরিমাণ পেঁয়াজ উৎপাদন করা যায়, সেদিকে বিশেষভাবে নজর দিতে হবে।
কৃষিসচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম বলেন, আগামী তিন বছরে দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন ১০ লাখ টন বাড়ানো হবে। সে জন্য গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ উৎপাদন বাড়াতে হবে। কৃষি মন্ত্রণালয় এ লক্ষ্য অর্জনে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
অনুষ্ঠানে বারির মহাপরিচালক মো. নাজিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ) মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক মো. হামিদুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য দেন।