নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায় বাবার মৃত্যুর পর ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে লাশ হয়েছেন ছেলে। ধারণা করা হচ্ছে, বাবার শোক সইতে না পেরে ছেলে আত্মহত্যা করেছেন।
বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার বিশকাকুনী ইউনিয়নের ধোবারুহী গ্রামে একটি পুকুরপাড়ের ঘর থেকে ছেলেটির লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশ উদ্ধার হওয়া ওই তরুণের নাম শেখ রাসেল (২৩)। তিনি ধোবারুহী গ্রামের মাদ্রাসাশিক্ষক আবদুল বারীর (৬০) ছেলে। তিনি ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজে অর্থনীতি বিভাগের স্নাতক চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল বুধবার রাতে রাসেলের বাবা আবদুল বারী হৃদরোগে আক্রান্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত আটটার দিকে হাসপাতালের চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এতে রাসেল মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। বাবার লাশ নিয়ে বাড়িতে এসে রাত ১২টা থেকে ১টার মধ্যে নিজের ফেসবুকে তিনটি পোস্ট দেন রাসেল। এতে তিনি লিখেছেন, ‘আমার দুনিয়ায়, আমার আখিরাত আমার আব্বা। ডাক্তার মাত্র আব্বা রে মৃত ঘোষণা করল। দোয়া চাই, অবশ্যই আব্বাকে একা ছাড়ব না, আমিও সঙ্গী হব। আমার দুনিয়া, আমার আব্বা আমার সব, আমার কলিজা। আমার অক্সিজেন ফুরিয়ে গেল, আমার দেহ থেকে কলিজা বিচ্ছিন্ন হলো। বাবা আমাদের জন্য আমৃত্যু সংগ্রাম করে গেলেন প্রতিদান দিলাম। আব্বা তুমি আমার সুপারহিরো। আমার বেঁচে থাকার সম্বল তুমি নাই, আমি কি করে থাকব বলো? ১০টা বেজে গেল, কই তোমার ফোন তো আসল না। কই আমার খোঁজ তো কেউ নিল না।’ এই স্ট্যাটাস দেওয়ার পর বাড়ির পাশে পুকুরপাড়ে একটি ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় মাফলার পেঁচিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন।
এ বিষয়ে পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ তাওহীদুর রহমান বলেন, ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে ধারণা করা হচ্ছে ওই তরুণ আত্মহত্যা করেছেন। তাঁর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।