করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ১৭ আগস্ট থেকে বান্দরবানে সরকারি-বেসরকারি সব পর্যটনকেন্দ্র ও আবাসিক হোটেল-মোটেল খুলে দেওয়া হচ্ছে। আগামীকাল রোববার এ–সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
মার্চের মাঝামাঝি থেকে করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে জেলায় পর্যটনকেন্দ্র ও আবাসিক হোটেল-মোটেল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তখন থেকে প্রায় পাঁচ মাস ধরে পর্যটন বন্ধ রয়েছে।
জেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আজ শনিবার জানিয়েছেন, জেলায় করোনাভাইরাস পরিস্থিতি আগের চেয়ে কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। তা ছাড়া কক্সবাজার, রাঙামাটিসহ পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে পর্যটন খুলে দেওয়ার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এ কারণে বান্দরবানেও ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের পরে ১৭ আগস্ট থেকে পর্যটন, হোটেল-মোটেল খুলে দেওয়ার ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পর্যটন ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আগাম প্রস্তুতির জন্য ‘করোনাও থাকবে, পর্যটনও চলবে’, এ রকম অভিযোজনমূলক নির্দেশনা কাল দেওয়া হবে।
জেলার পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, জেলা শহর ও উপজেলাগুলোতে প্রায় ৬০টি আবাসিক হোটেল-মোটেলে পর্যটন মৌসুমে দৈনিক পাঁচ হাজারের বেশি পর্যটক আসেন। পর্যটকদের সেবায় আবাসিক হোটেল-মোটেলে প্রায় ১ হাজার ১৫০ জন কর্মী, ট্যুরিস্ট গাইড ২৫০ জন, পাঁচ শতাধিক গাড়িচালক ও চালকের সহকারী এবং খাবারের দোকানের কর্মচারীদের কর্মসংস্থান হয়ে থাকে। তাঁরা এখন সবাই বেকার হয়ে পড়েছেন।
আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য ও পর্যটন ব্যবসায়ী কাজল কান্তি দাশ জানিয়েছেন, পাঁচ মাস ধরে কোনো আয় ছাড়া কর্মচারীদের বেতন দিতে হচ্ছে। পর্যটন খুলে দিলে মালিকদের লাভ না হোক, কর্মচারীদের চালানোর মতো ব্যবসা হলেও কিছুটা সাশ্রয় হবে।
আবাসিক হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম জানান, জেলায় কর্মসংস্থান ও আয়ের বড় খাত হচ্ছে পর্যটন। পর্যটনের আর্থিক শৃঙ্খলায় একজন পর্যটকের পেছনে সরাসরি ১১ শ্রেণির পেশাজীবী মানুষ লাভবান হন। সে হিসাবে বান্দরবানে প্রতিদিন গড়ে ৫ হাজার পর্যটকের সঙ্গে ৫৫ হাজার মানুষের আয়রোজগারের বিষয় রয়েছে।
সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘পর্যটন খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তে আমরা খুশি।’
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শামীম হোসেন বলেছেন, ‘যেহেতু করোনাভাইরাস পুরোপুরি যাচ্ছে না, তাই ভাইরাসটির সঙ্গে অভিযোজন করে বাঁচতে হবে। এ জন্য অন্যান্য জেলার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বান্দরবানেও পর্যটন খুলে দেওয়া হবে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারে কড়া নজরদারি থাকবে।’