বসতবাড়ি থেকে পানি নেমে গেছে, নীলফামারীতে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি

আজ বেলা তিনটায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে
ছবি: প্রথম আলো

তিস্তার নদীর পানি কমে নীলফামারীতে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। ইতিমধ্যে নদীবেষ্টিত বিভিন্ন এলাকার বন্যার পানি নেমে সবকিছু স্বাভাবিক হতে শুরু করে। বুধবার থেকে জেলার বিভিন্ন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বন্যার পানি নামতে শুরু করে।

আজ শুক্রবার বেলা তিনটায় লালমনিরহাটের দোয়ানীতে অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ওই পয়েন্টে বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ৬০ মিটার। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছয়টায় পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। বুধবার থেকে পানি কমতে শুরু করে।

বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তিস্তা নদীর সৃষ্ট বন্যায় নদীবেষ্টিত পূর্ব ছাতনাই, পশ্চিম ছাতনাই, টেপাখড়িবাড়ি, খগাখড়িবাড়ি, খালিশাচাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী, গয়াবাড়ি এবং জলঢাকা উপজেলার ডাউয়াবাড়ি ও শৌলমারী ইউনিয়নের প্রায় ২০টি চর ও গ্রামের ১০ হাজারের বেশি পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়ে। বুধবার থেকে নদীর পানি কমতে থাকায় এসব এলাকার বসতবাড়ি থেকে বন্যার পানি নেমে গেছে। আজ সকালে স্থানীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আফতাব উদ্দিন সরকার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ খান প্রথম আলোকে বলেন, বুধবার সকাল থেকে তিস্তার পানি কমতে শুরু করে। আজ পর্যন্ত গ্রামের বাড়িঘর থেকে বন্যার পানি সম্পূর্ণ নেমে গেছে। সকালে স্থানীয় সংসদ সদস্য বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন।

টেপাখড়িবাড়ি ইউপির চেয়ারম্যান ময়নুল হক বলেন, তিস্তা নদীর পানি কমে যাওয়ায় তাঁর ইউনিয়নের সব বাড়ি থেকে বন্যার পানি নেমে গেছে। এখন পরিস্থিত সম্পূর্ণ স্বাভাবিক।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, ১২ জুন থেকে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর-নিচে ওঠানামা করছিল। ১৭ জুন সকালে প্রথমবারের মতো বিপৎসীমা ছাড়িয়ে ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। ২০ জুন বিকেলে সেখানে সর্বোচ্চ ৩১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। বুধবার থেকে দফায় দফায় পানি কমে আজ বেলা তিনটায় ৫৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

পাউবোর ডালিয়া ডিভিশনের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, আজ সকাল ৬টায় তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৫২ দশমিক ১৫ মিটার, সকাল ৯টায় ৫২ দশমিক ১২ মিটার, দুপুর ১২টায় ৫২ দশমিক ১০ মিটার ও বেলা ৩টায় ৫২ দশমিক শূন্য ৫ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল, যা বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার নিচে আছে।

ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসফাউদদৌলা প্রথম আলোকে বলেন, তিস্তার পানি কমে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। আজ বেলা তিনটায় নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ব্যারাজের সব কটি (৪৪টি) জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক।