বরিশাল বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ৮৬ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে, যা এক দিনে বিভাগে সর্বোচ্চ কোভিড–১৯ রোগী শনাক্তের রেকর্ড। এ নিয়ে বিভাগে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৭৪৮ জনে।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে বিভাগে ৮৬ জনের কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে। মঙ্গলবার ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের সংখ্যা ছিল ৫৫, সোমবার ছিল ৪৯। এর আগের দিন গত রোববার ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হন ৫৮ জন। মোট কোভিড আক্রান্ত ৭৪৮ জনের মধ্যে গত ৪ দিনে শনাক্ত হয়েছে ২৩৮ জন, যা মোট আক্রান্তের ৩১ দশমিক ৮১ শতাংশ।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারাও উদ্বিগ্ন। বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা আজ বুধবার দুপুরে বিভাগের ছয় জেলার সিভিল সার্জনদের সঙ্গে বৈঠক করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য অবিলম্বে সব ধরনের যান চলাচল ও বাজার, শপিং মল বন্ধে কঠোর লকডাউন ঘোষণার সুপারিশ করেছেন।
বিভাগে আক্রান্তের দিক থেকে সর্বোচ্চে রয়েছে বরিশাল জেলা। এ জেলায় নতুন শনাক্ত ৬১ জনসহ মোট সংখ্যা দাঁয়িয়েছে ৪২৬ জনে। এ ছাড়া পিরোজপুরে নতুন ৯ জনসহ ৭৮ জন, বরগুনায় নতুন ৪ জনসহ ৭১ জন, পটুয়াখালীতে নতুন ২ জনসহ ৬৫ জন, ঝালকাঠিতে নতুন ৪ জনসহ ৫৭ জন এবং ভোলায় নতুন ৬ জনসহ মোট আক্রান্ত ৫২ জন।
গত কয়েক দিনের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, পুরো বিভাগের কোভিড-১৯ সংক্রমণের কেন্দ্রস্থল এখন বরিশাল নগর এলাকা। বরিশাল জেলায় বুধবার পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ৪২৫ জনের ৩৪৬ জনই বরিশাল নগরের। ফলে দক্ষিণাঞ্চলের এই বরিশাল শহরটি এখন করোনার কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে। বিভাগে মোট শনাক্ত রোগী ৭৪৮ জনের ৩৪৬ জন বরিশাল নগরের, যা বিভাগের ৬ জেলায় শনাক্ত মোট রোগীর ৪৬ দশমিক ৪১ ভাগ।
বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য বিভাগের সহকারী পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত চার দিনের সংক্রমণ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যাচ্ছে, বরিশাল নগরটি করোনা সংক্রমণের হটস্পটে পরিণত হচ্ছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বুধবার বিভাগের সব জেলার সিভিল সার্জনদের নিয়ে বৈঠক করেছি। প্রত্যেক জেলা প্রশাসকদের পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুনরায় সব ধরনের যানবাহন, বাজার, শপিং মল ও জনসমাগম বন্ধের জন্য কঠোর লকডাউনের সুপারিশ করার জন্য বলা হয়েছে। এখন যা পরিস্থিতি তাতে এর কোনো বিকল্প নেই।’
শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল আরও বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য একটা খুব উদ্বেগের বিষয়। গত চার দিনে আক্রান্তের সংখ্যা বলে দিচ্ছে আমরা খুব দ্রুত বড় ধরনের বিপদের দিকে এগোচ্ছি। এমনকি স্বাস্থ্য বিভাগের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরাও ব্যাপক হারে সংক্রমিত হচ্ছেন। পুরো বিভাগের সংক্রমণের উৎসে পরিণত হয়েছে বরিশাল শহর।’