বরিশাল বিভাগে এক দিনে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা ১০০-এর কাছাকাছি পৌঁছেছে। বৃহস্পতিবার এই বিভাগে সর্বোচ্চ ৯৮ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এ ছাড়া উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া দুজনের কোভিড শনাক্ত হয়েছে। বিভাগে কোভিড রোগীর সংখ্যা এখন ১ হাজার ২১৪।
বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার ৭০ বছর বয়সী এক মুক্তিযোদ্ধা বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টায় বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে মারা যান। পরে তাঁর নমুনা পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ আসে। ৮ জুন ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার তিমিরকাঠি গ্রামে মারা যান ৬৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি। তাঁর নমুনা পরীক্ষাতেও করোনা পজিটিভ আসে। এ নিয়ে বিভাগে ২৫ জন কোভিড-১৯ রোগী মারা গেলেন। এর মধ্যে বরিশালে ৯ জন, পটুয়াখালীতে ৬ জন, পিরোজপুরে ৩ জন, বরগুনায় ২ জন, ঝালকাঠিতে ৩ জন এবং ভোলায় ২ জন মারা গেছেন।
স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, নতুন করে শনাক্ত হওয়া ৯৮ জনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বরিশাল জেলায় ৫৮ জন। এ নিয়ে জেলায় রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৫৯। বরিশালের পর ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি শনাক্ত হয়েছে পটুয়াখালী জেলায়। এ জেলায় নতুন ৩০ জনসহ মোট কোভিডে আক্রান্ত ১১৩ জন। এ ছাড়া পিরোজপুরে ৯৪ জন, বরগুনায় নতুন ২ জনসহ ৯৪ জন, ঝালকাঠিতে নতুন ৫ জনসহ ৭৫ জন এবং ভোলায় ২ জনসহ মোট ৭৬ জন আছেন।
বৃহস্পতিবার ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল জেলায় আক্রান্ত ৫৮ জনের ৩৩ জনের বরিশাল নগরের বাসিন্দা। এর মধ্যে পাঁচজন পুলিশ সদস্য, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দুজন চিকিৎসক, ছয় নার্স, একজন গাড়িচালক রয়েছেন।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গত ৯ এপ্রিল বরগুনা ও পটুয়াখালী জেলার ৩২ ও ৭০ বছর বয়সী দুই ব্যক্তি করোনার উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর পর তাঁদের দুজনের নমুনা পরীক্ষা করোনা পজিটিভ হওয়ার মধ্য দিয়ে বিভাগের প্রথম দুজন করোনা রোগী শনাক্ত হয়। ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত বিভাগে সংক্রমণের সংখ্যা ছিল ৮৯। ৩১ এপ্রিল তা ১১৭ জনে দাঁড়ায়। এরপর মে মাসের প্রথম দুই সপ্তাহে তা আরও বেড়ে দাঁড়ায় ২১৬ জনে। মে মাসের শেষ দুই সপ্তাহ তা প্রায় তিন গুণ বেড়ে হয় ৬১৭ জন। আর জুনের প্রথম ১১ দিনে তা ৫৮৮ জন বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ২১৪ জনে, যা মোট শনাক্তের ৪৮ দশমিক ৪৩ ভাগ।
বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, এপ্রিলে বিভাগে ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের সংখ্যা ১৫ জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। মে মাসে তা ১৯ থেকে ৪০-এর ঘরে পৌঁছায়। আর জুনের শুরুতেই তা ৭০ থেকে ৯৮-এ পৌঁছাল। জুনে সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বাড়ার প্রেক্ষাপটে তা প্রতিরোধে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে কঠোর লকডাউনের সুপারিশ করা হয়েছিল।