ঈদের আনন্দ সবার মধ্যে ভাগাভাগি করতে বরিশালে দিনভর অসহায়-দুস্থদের খুঁজে খুঁজে রান্না করা খাবার বিতরণ করছে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) নেতা-কর্মীরা। সোমবার ঈদের দিনে এই খাবার বিতরণের জন্য সংগঠনটি নগরের ফকিরবাড়ি রোডে বাসদ কার্যালয়ের পাশে মাতৃছায়া স্কুল মাঠে রোববার রাত থেকে শুরু হয় রান্না-বান্নার কাজ। পাঁচ হাজার মানুষের জন্য রান্না শেষ করতে সকাল হয়ে যায়। এরপর সে সব খাবার প্যাকেট করে শুরু হয় বিতরণ।
সংগঠনটির কর্মীরা জানান, খাবারের তালিকায় ছিল তেহারি, চারটি করে মুরগির জাল ফ্রাই এবং দুটি করে ডিম। একটি প্যাকেট দিয়ে যাতে এক পরিবারের একাধিক লোক খেতে পারে এ জন্য এই ব্যবস্থা
বরিশাল জেলা বাসদের সদস্যসচিব মনীষা চক্রবর্তী বলেন, করোনা-আম্পানের দুর্যোগে সাধারণ খেটে খাওয়া ও নিম্নবিত্তদের জীবন-জীবিকা বিপর্যস্ত। স্বাভাবিক তিনবেলা খাবার জোগাড় করাই তাদের জন্য দুরূহ। এরপর ঈদের আনন্দ, ভালোমন্দ কিছু রান্নার সামর্থ্য নেই অনেকের। এ জন্য বাসদের পক্ষ থেকে এসব পরিবারকে একবেলা ভালো খাবার বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। পাঁচ হাজার মানুষকে খাবার পৌঁছে দেন স্বেচ্ছাসেবকেরা।
সংগঠন সূত্র জানায়, সোমবার দুপুর ১২টার পর স্বেচ্ছাসেবকেরা নগরের ৩০টি ওয়ার্ডের অসহায় ব্যক্তিদের খুঁজে খুঁজে বিতরণ করেন দুপুরের খাবার। বাসদের নেতা-কর্মীসহ এ কাজে অংশ নেন প্রায় দেড় শ স্বেচ্ছাসেবী। এ কর্মসূচিকে সংগঠনের পক্ষ থেকে নামকরণ করা হয়েছে ‘মানবতার ঈদ উৎসব’।
করোনা সংকটের শুরুতে মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে ঘরে ঘরে মুষ্টিচাল সংগ্রহের লক্ষ্যে ‘এক মুঠো চাল’ কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামে বাসদ। সংগঠনটির নেতা-কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবীরা নগরের বাড়ি বাড়ি ব্যাগ সরবরাহ করে মুষ্টি চাল তুলে তা দুস্থ মানুষের মাঝে বিতরণ শুরু করেন। এরপর থেকে বরিশালে খাদ্য সহায়তা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী প্রদান, চিকিৎসাসেবা, করোনা রোগীদের জন্য বিনা মূল্যে অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসসহ নানা ধরনের সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।
জেলা বাসদের আহ্বায়ক ইমরান হাবিব সোমবার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘মানুষ মানুষের জন্য। অসহায় মানুষের পাশে আমরা না দাঁড়ালে কারা দাঁড়াবে। একজনের দেখাদেখি আরেকজন নামছে। লক্ষ্য একটাই, অসহায় মানুষগুলো যেন খাবার পায়। তারা যেন অভুক্ত না থাকেন।’
ইমরান হাবিব আরও বলেন, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে অনেক মানুষের না খেয়ে দিন কাটছে। পেটে ক্ষুধা থাকলে ঈদের আনন্দ আসবে কোথায় থেকে। তাই তাদের মাঝে ঈদের আনন্দ কিছুটা ছড়িয়ে দিতে খাবার বিতরণ করা হয়েছে। দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত পাঁচ হাজার গরিব মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়েছে। খাবারের প্যাকেট পেয়ে তাদের মুখের হাসি ফুটেছে। এই অনুভূতি বলে বোঝানো যাবে না।