বরিশালে বাবাকে হত্যার দায়ে ছেলেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাঁকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে বরিশালের জেলা ও দায়রা জজ রফিকুল ইসলাম এ দণ্ড দেন। আসামির উপস্থিতিতে এ দণ্ড দেন বিচারক। জেলা জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারী হেদায়াতুন্নবী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত রেজাউল মোল্লা (৩৮) বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার আস্কর কালীবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর রাত ১০টার পরে রেজাউল তাঁর বাবা আবদুস সাত্তার মোল্লাকে ডেকে ঘরের সামনে দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। এ সময় সাত্তারের দ্বিতীয় স্ত্রী রুমা বেগম তাঁকে রক্ষার জন্য এগিয়ে এলে তাঁকেও হত্যার জন্য উদ্যত হন রেজাউল। এ সময় রুমা বেগম বাইরে গিয়ে চিৎকার করলে লোকজন ছুটে এলে রেজাউল পালিয়ে যান।
পরে স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহত সাত্তার মোল্লাকে উদ্ধার করে আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় রুমা বেগম পরের দিন আগৈলঝাড়া থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়, তাঁর স্বামীর আগের স্ত্রীর সংসারে তিন ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। সাত্তার মোল্লা ও তাঁর (মামলার বাদী) সংসারে আরও একটি ছেলে হয়। ঘটনার সময় সেই ছেলের বয়স ছিল সাত মাস। সাত্তার মোল্লার দ্বিতীয় বিয়ে প্রথম স্ত্রীর সন্তান রেজাউল মেনে নিতে পারেনি। রেজাউল প্রায়ই তাঁর বাবা ও সৎমাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন। এর জের ধরেই রেজাউল তাঁর স্বামীকে হত্যা করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আগৈলঝাড়া থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) মোশাররফ হোসেন ২০১৮ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি রেজাউলের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। ১৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় রেজাউলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন বিচারক।