বরিশাল থেকে অভ্যন্তরীণসহ দূরপাল্লার সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ আছে। বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনিবুর রহমানের সরকারি বাসভবনে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গতকাল বুধবার রাত থেকে নগরের রূপাতলী বাস টার্মিনাল ও নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে সব ধরনের দূরপাল্লার ও আন্তজেলা বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এ ছাড়া বরিশাল সিটি করপোরেশনের আবর্জনা পরিবহনের গাড়ি দিয়ে সদর উপজেলা সংলগ্ন প্রায় এক কিলোমিটার এলাকায় বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের কয়েকটি স্থানে ব্যারিকেড দিয়ে রাখা হয়েছে। এতে ওই সড়ক দিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
বরিশাল-পটুয়াখালী বাস মালিক সমিতির সভাপতি ও মহানগর যুবলীগের সদস্য মমিন উদ্দিন এই তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, রাতে গুলিতে ও পুলিশের লাঠিপেটায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে অভ্যন্তরীণসহ দূরপাল্লার সব পথে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
গুলি চালানোর ঘটনার তদন্ত চাইব। মেয়র হিসেবে এভাবে দায়িত্ব পালন করা সম্ভব না। প্রধানমন্ত্রী আমাকে শপথ পড়িয়েছেন। আমার বাবা আছেন। তাঁরা সিদ্ধান্ত নেবেন।সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ, মেয়র, বরিশাল সিটি করপোরেশন
বরিশাল সদরের ইউএনও মুনিবুর রহমানের সরকারি বাসভবনে গতকাল হামলার ঘটনা ঘটে। গতকাল রাতে দুই দফায় জেলা ছাত্রলীগের কয়েক শ নেতা-কর্মী ইউএনওর বাসভবনে হামলা চালায়। হামলায় ইউএনওর বাসভবনে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কয়েকজন আনসার সদস্য আহত হন। ছাত্রলীগের দাবি, এ সময় তাদের অন্তত ৩০ জন নেতা-কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
ইউএনও মুনিবুর রহমান বলেন, উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণের ভেতরে বিভিন্ন স্থানে শোক দিবস উপলক্ষে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুকের ব্যানার-পোস্টার লাগানো ছিল। রাতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এসব ছিঁড়তে আসে। রাতে লোকজন ঘুমাচ্ছেন জানিয়ে তিনি ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বৃহস্পতিবার সকালে এগুলো ছিঁড়তে বলেন। এরপর তাঁরা তাঁকে গালিগালাজ করতে থাকেন। একপর্যায়ে তাঁরা তাঁর বাসায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন।
রাতে গুলিতে ও পুলিশের লাঠিপেটায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে অভ্যন্তরীণসহ দূরপাল্লার সব পথে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।মমিন উদ্দিন, বরিশাল-পটুয়াখালী বাস মালিক সমিতির সভাপতি
ঘটনার বিষয়ে গতকাল রাত তিনটার দিকে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘গুলি চালানোর ঘটনার তদন্ত চাইব। মেয়র হিসেবে এভাবে দায়িত্ব পালন করা সম্ভব না। প্রধানমন্ত্রী আমাকে শপথ পড়িয়েছেন। আমার বাবা আছেন। তাঁরা সিদ্ধান্ত নেবেন। যদি আমার অপরাধ হয়ে থাকে, আমি আমার পদত্যাগপত্র দিয়ে দেব।’ গতকাল রাত ৩টার দিকে নগরের কালিবাড়িতে সেরনিয়াবাত ভবনে উপজেলা পরিষদে উদ্ভূত ঘটনার বিবরণ শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের তিনি এসব কথা বলেন।