বরখাস্ত মেয়র জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মাদারীপুরের আদালতে মামলা

জাহাঙ্গীর আলম
জাহাঙ্গীর আলম

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে সদ্য সাময়িক বরখাস্ত হওয়া জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে এবার মাদারীপুর আদালতে মামলা হয়েছে। মাদারীপুর আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক বাবুল আখতার বাদী হয়ে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এ মামলাটি করেন।

মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের অভিযোগে এই মামলা হয় বলে প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন মাদারীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. সিদ্দিকুর রহমান। এর আগে গত মঙ্গলবার মেয়র জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে রাজবাড়ী আদালতেও একটি মামলা হয়।

মামলার এজাহার ও আদালত সূত্র জানায়, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার আবেদন করেন বাদী। আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শহীদুল ইসলাম বিষয়টি তদন্ত করে আগামী ১২ জানুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) আদেশ দিয়েছেন।

পিপি মো. সিদ্দিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গাজীপুর সিটির মেয়র জাহাঙ্গীর বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অপ্রীতিকর কথা বলেছেন। তিনি বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে ইতিহাস বিকৃত করেছেন। বিবাদী মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের সংখ্যা নিয়েও বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন। তাঁর এরূপ বক্তব্যের কারণে সব শ্রেণি–পেশার মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে এবং মানুষ বিভিন্নভাবে বিভক্ত হয়ে একে অপরের ওপর আক্রমণ করার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। এসব কারণে বাদী দণ্ডবিধির ৫০৪, ৫০৫ ও ৫০৫ (ক) ধারায় মামলা হয়েছে। আদালতের বিচারক মামলাটি আমলে নিয়েছেন। এ বিষয়ে পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার বাদী মাদারীপুর আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বাবুল আখতার প্রথম আলোকে বলেন, ‘গাজীপুরে সিটি মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের বক্তব্যের কারণে আমাদের জাতির পিতা ও মহান স্বাধীনতার চেতনাকে অবজ্ঞা করা হয়েছে। তাই আমরা তাঁর বিচারের দাবিতে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছি।’

গত সেপ্টেম্বরে গোপনে ধারণ করা জাহাঙ্গীর আলমের কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জেলার কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করা হয়েছে বলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা অভিযোগ করেন। এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধ নিয়েও বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য প্রদান করেন মেয়র জাহাঙ্গীর।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৯ নভেম্বর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভায় জাহাঙ্গীরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। সর্বশেষ আজ বৃহস্পতিবার মেয়র পদ থেকে জাহাঙ্গীরকে সাময়িক বরখাস্তের কথা জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।