সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক পানিতে তলিয়ে গিয়ে সারা দেশের সঙ্গে সুনামগঞ্জের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সেখানে পাওয়া যাচ্ছে না মুঠোফোনের নেটওয়ার্কও। জেলার প্রতিটি উপজেলাই কমবেশি প্লাবিত হয়েছে। অধিকাংশ ঘরেই হাঁটু থেকে গলাসমান পানি। নৌকার অভাবে অনেকে ঘর ছেড়ে নিরাপদেও যেতে পারছে না। এমন অবস্থায় পানিতে আটকে পড়া মানুষকে উদ্ধারে জেলার তিন উপজেলায় সেনাবাহিনী নামানো হচ্ছে।
সিলেটের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) দেবজিৎ সিংহ প্রথম আলোকে বলেন, সুনামগঞ্জে বন্যার পানিতে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারে সেনাবাহিনীকে উদ্ধার তৎপরতা চালানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে। সুনামগঞ্জ সদর, ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলায় শিগগির এ উদ্ধার কার্যক্রম শুরু হবে।
এর আগে গত বুধবার থেকে উজান থেকে ব্যাপক পরিমাণে পাহাড়ি ঢল নামা শুরু হলে বন্যা পরিস্থিতির তৈরি হয়। আজ শুক্রবার পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। জেলার প্রায় সব উপজেলা বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। অসংখ্য রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্লাবিত হয়েছে। জেলা সদরের সঙ্গে পাঁচটি উপজেলার সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন কয়েক লাখ মানুষ।
বানভাসি মানুষ জানিয়েছেন, প্রথম দফা বন্যার রেশ কাটতে না কাটতেই এখন আবার দ্বিতীয় দফার বন্যায় মানুষ চরম বিপাকে পড়েছেন। আগের দফার চেয়ে এখন পানির পরিমাণ অনেক বেশি। সুনামগঞ্জ শহরের প্রায় প্রতিটি বাসাতেই পানি ঢুকেছে। উকিলপাড়া এলাকার একজন বাসিন্দা বলেন, সুনামগঞ্জে এর আগে এত ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে।
বন্যাকবলিত এলাকার মানুষ জানিয়েছে, জেলায় ভেঙে পড়েছে যোগাযোগব্যবস্থা। কেউ কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছে না। এই মুহূর্তে সুনামগঞ্জের সবার ঘরে পানি নেই। বিদ্যুৎ নেই। মুঠোফোন নেটওয়ার্ক বন্ধ। পরিস্থিতি ক্রমে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। এর চেয়েও বড় বিষয় হচ্ছে, মানুষের জীবনের নিরাপত্তা তৈরি করা উচিত।
স্থানীয় সরকার বিভাগ সুনামগঞ্জের উপপরিচালক মোহাম্মদ জাকির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় পুরোপুরি বিপর্যস্ত সুনামগঞ্জ জেলা। তবে প্রশাসন সর্বাত্মক চেষ্টা করছে মানুষের পাশে দাঁড়াতে।