বন্যার কারণে হবিগঞ্জের ১১৬ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা

বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাস
ছবি: প্রথম আলো

উজানে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণে হবিগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলা বন্যাকবলিত হওয়ায় জেলার ছয়টি উপজেলার ১১৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে বন্যার্ত মানুষকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।

আজ সোমবার বেলা তিনটায় হবিগঞ্জের খোয়াই নদের পানি বিপৎসীমার ১২৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে কুশিয়ারা নদীর হবিগঞ্জ অংশে পানি প্রবাহিত হচ্ছে বিপৎসীমার ১৪৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে। এ ছাড়া ২৪ ঘণ্টায় হবিগঞ্জে ৪৫ দশমিক ৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

হবিগঞ্জের ৯ উপজেলার মধ্যে আজ পর্যন্ত ৬টি উপজেলার ৩২টি ইউনিয়ন বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। বিশেষ করে ভাটি উপজেলা হিসেবে পরিচিত আজমিরীগঞ্জ, বানিয়াচং, নবীগঞ্জ ও লাখাই উপজেলার বন্যার পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতি হচ্ছে। এ ছাড়া সদর ও বাহুবল উপজেলার নদ-নদী ও হাওরের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যা হতে পারে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হতে পারে বলে ধারণা করছে জেলা প্রশাসন।

বন্যা পরিস্থিতিতে হবিগঞ্জের ৬ উপজেলার মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের ৩৬টি এবং প্রাথমিক পর্যায়ের ৮০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে কিছু প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে প্লাবিত হয়েছে। এ জন্য জেলা শিক্ষা কার্যালয় ৬ উপজেলার ১১৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছেন। এর মধ্যে যে বিদ্যালয়গুলো এখনো প্লাবিত হয়নি, সেগুলো আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বানভাসি মানুষ এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছে।

জেলার সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম মওলা প্রথম আলোকে বলেন, নবীগঞ্জে ১৮টি, আজমিরীগঞ্জে ২২টি, বানিয়াচং উপজেলায় ৪০টিসহ মোট ৮০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া ৫২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্যার্তদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ রুহল্লাহ জানান, যে ছয়টি উপজেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে, সেসব এলাকার প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ ছাড়া বন্যাকবলিত মানুষকে আশ্রয় দিতে তাঁরা গতকাল রোববার থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ের ৩৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছেন।

জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহ জহুরুল হোসেন বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাত থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। এ জন্য হবিগঞ্জের বন্যাকবলিত উপজেলাগুলোতে পানি বাড়ছে। আশ্রয়কেন্দ্রে বন্যার্ত মানুষের সংখ্যা বাড়লে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আরও আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হবে। এ বিষয়ে প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য প্রশাসন থেকে শিক্ষা কার্যালয়গুলোতে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।