বন্দরে পোশাক কারখানার আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে

আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। আজ শুক্রবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার মদনপুর এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার মদনপুরে জাহিন গার্মেন্টসের আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, সোনারগাঁ, বন্দর ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিট প্রায় সাড়ে ৪ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসাইন রাত সাড়ে ৯টায় এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, কারখানা বন্ধ থাকায় ভেতরে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে তাঁরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছেন। তারপরও আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর কারখানা তল্লাশি করা হবে। তিনি বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে আগুনের উৎস সম্পর্কে জানা যায়নি।

নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন বলেন, বিকেল সাড়ে চারটার দিকে জাহিন পোশাক কারখানায় আগুনের সূত্রপাত ঘটে। মুহূর্তের মধ্যে আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। কারখানা বন্ধ থাকায় হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

নারায়ণগঞ্জ শিল্প পুলিশ-৪–এর পরিদর্শক বশির আহম্মেদ প্রথম আলোকে বলেন, ওই কারখানায় দেড় হাজার শ্রমিক কাজ করেন। শুক্রবার কারখানা বন্ধ ছিল। শুধু নিটিং সেকশনে ২০ জন ও ডাইং সেকশনে ৪০–৪৫ জন শ্রমিক কর্মরত ছিলেন। বিকেলে দোতলায় ফিনিশিং ও কাটিং ভবন থেকে আগুনের সূত্রপাত। আগুন দ্রুত পাশের ভবনে ছড়িয়ে পড়লে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নেভাতে কাজ শুরু করেন।

ওই কারখানার ৫ নম্বর ইউনিটের শ্রমিক মাসুম বিল্লাহ বলেন, শুক্রবার হওয়ায় সাপ্তাহিক ছুটি ছিল। তাই কারখানা বন্ধ ছিল। তবে ফিনিশিং ও ওভেন সেকশনে কাজ চলছিল। কারখানার ৫ নম্বর ইউনিটে কাজ করা অবস্থায় হঠাৎ দেখেন ওপরের তলায় আগুন জ্বলছে। প্রথমে দ্বিতীয় তলায় আগুন লাগে, এরপর ওপরের দিকে উঠতে থাকে। তারপর ছড়িয়ে পড়ে। শ্রমিকেরা কারখানা থেকে বেরিয়ে আসেন।

কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জামাল উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, শুক্রবার কারখানা বন্ধ ছিল। ৬ নম্বর ভবনে টাইলসের কাজ হচ্ছিল। ৫ নম্বর স্ট্যান্ডার্ড মেশিনে ভেজা কাপড় শুকানোর কাজ করছিল কিছু শ্রমিক। আগুন লাগলে তাঁরা দ্রুত বেরিয়ে যায়। তিনি বলেন, শিপমেন্টের মালামাল, যন্ত্রপাতিসহ বিভিন্ন মাল পুড়ে তাঁর কমপক্ষে ২৮ থেকে ৩০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছেন। কীভাবে চারটি ভবনে আগুন লেগেছে, সেটি নিছক দুর্ঘটনা নাকি নাশকতা, তা বুঝতে পারছেন না। তিনি বলেন, তাঁর কারখানায় পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা ছিল। কারখানা খোলা থাকলে এই ক্ষয়ক্ষতি হতো না।

নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ বিল্লাল হোসেন বলেন, দ্বিতল চারটা ভবনে আগুন ছড়িয়ে যায়। কারখানার পরিসর বড় হওয়ায় এবং আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ায় নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের বেগ পেতে হচ্ছে। তবে কারখানা বন্ধ থাকার কারণে ভেতরে কোনো শ্রমিক আটকা পড়েননি বলে তাঁরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছেন। কোনো হতাহতের খবর এখনো পাওয়া যায়নি।