গাজীপুরের শ্রীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে মারা যাওয়া বাঘটি অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত ছিল। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলের এক চিকিৎসকের বরাত দিয়ে আজ বুধবার এ তথ্য জানিয়েছেন পার্কের এক কর্মকর্তা। অন্যদিকে জেব্রার মৃত্যুর ঘটনার পর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের প্রস্তাবের ভিত্তিতে জেব্রাসহ বিভিন্ন প্রাণীকে বেষ্টনীতে নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
এসব তথ্য প্রদানকারী পার্কের ওই কর্মকর্তা নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি। তাঁর সূত্রে জানা গেছে, অন্য প্রাণী থেকে জেব্রাকে আলাদা করার জন্য নতুন বেষ্টনী তৈরির কাজ চলছে।
এদিকে পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তবিবুর রহমানকে প্রত্যাহারের পর আজ থেকে একই পদে নতুন দায়িত্ব নিয়েছেন রফিকুল ইসলাম। সকালে তাঁকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছেন তবিবুর রহমান।
সাফারি পার্কে জেব্রার লাগাতার মৃত্যুর ঘটনায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে দল গঠন করা হয়। সে দলের প্রধান হলেন জাতীয় চিড়িয়াখানার সাবেক কিউরেটর ও সাবেক চিফ ভেটেরিনারি কর্মকর্তা এ বি এম শহীদুল্লাহ।
অন্য সদস্যরা হলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যাথলজি বিভাগের অধ্যাপক আবু হাদী নুর আলী খান, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জারি ও অ্যানেসথেসিয়া বিভাগের অধ্যাপক রফিকুল আলম, একই বিভাগের অধ্যাপক কাজী রফিকুল ইসলাম ও গাজীপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা উকিল উদ্দিন।
জেব্রার মৃত্যুর ঘটনার মধ্যেই পার্কের একটি বাঘের মৃত্যুর খবর সামনে আসে। যদিও খবরটি গোপন রেখেছিল সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ। পার্কের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, বাঘটি অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। এটির শরীরের নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে অ্যানথ্রাক্সের উপস্থিতি পেয়েছে চিকিৎসক দল। আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য নমুনা ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।
অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হওয়ায় বাঘটিকে চামড়াসহ মাটিতে গভীর গর্ত করে পুঁতে ফেলা হয়। অন্য প্রাণীর শরীরেও এটি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
অ্যানথ্রাক্সের জীবাণু পাওয়ার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি পার্কের প্রকল্প পরিচালক জাহিদুল কবির ও সদ্য প্রত্যাহার হওয়া পার্কের বন্য প্রাণী চিকিৎসা কর্মকর্তা হাতেম জুলকারনাইন। সদ্য যোগ দেওয়া ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, তিনি নতুন দায়িত্ব নিয়েছেন। সবকিছু বুঝে নিতে বিকেল পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
পার্ক সূত্রে জানা গেছে, জেব্রাসহ বিভিন্ন প্রাণিবেষ্টনীতে পর্যবেক্ষণের জন্য সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন প্রায় শেষের দিকে। জেব্রার বিচরণক্ষেত্রসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রাণীদের খাবার দেওয়ার জন্য বিশেষ ধরনের পাত্র তৈরি করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই বড় লেকের সম্পূর্ণ পানি তুলে ফেলা হয়েছে। জেব্রার বিচরণক্ষেত্রের বিভিন্ন স্থানে মাটি ওলটপালট করা হচ্ছে। এসব কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে চিকিৎসক দলের ১০ দফা প্রস্তাবের আলোকে।