বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন পালন নিয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের হাতাহাতি, দুই সংবাদকর্মীকে মারধর

বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা নিয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের হাতাহাতি
প্রথম আলো

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন উদ্‌যাপন উপলক্ষে তাঁর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা নিয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুটি পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। একটি পক্ষ বরিশাল সদর আসনের সাংসদ ও পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুকের অনুসারী। অপর পক্ষটি সিটি করপোরেশনের মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর অনুসারী। হাতাহাতির ঘটনার ছবি তুলতে গেলে দুজন সাংবাদিককে মারধর করা হয়। ওই দুই সাংবাদিককে আহত অবস্থায় বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় ক্যাম্পাসে প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় এই হাতাহাতির ঘটনার সূত্রপাত। পরে এ নিয়ে দুপুর পর্যন্ত দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা অব্যাহত থাকে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পুলিশের হস্তক্ষেপে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর খোরশেদ আলম ছাত্রলীগের দুই পক্ষের হাতাহাতির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পুলিশ ও শিক্ষকদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। দুই সাংবাদিককে মারধরের বিষয়টিও স্বীকার করেছেন তিনি।

মহিউদ্দিন সিফাতের নেতৃত্বাধীন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা দীর্ঘক্ষণ ৬ দফা স্তম্ভের সামনে দাঁড়িয়ে থেকে আমাদের পথ আটকে রাখেন। এ জন্য উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে আমরা শ্রদ্ধা নিবেদন করতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়েছে।
রক্তিম হাসান, প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুকের অনুসারী

প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন উদ্‌যাপন উপলক্ষে আজ বেলা ১১টায় ক্যাম্পাসের ৬ দফা স্তম্ভ এলাকায় সমবেত হয় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দুই পক্ষ। মেয়র অনুসারী ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা বেলা ১১টার দিকে ছাত্রলীগ নেতা মহিউদ্দিন সিফাতের নেতৃত্বে ৬ দফা স্তম্ভে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে যান। একই সময়ে রক্তিম হাসান ওরফে অমিতের নেতৃত্বে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসেন প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুকের অনুসারীরা। এ সময় দুই পক্ষ দুই নেতার নামে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের হামলায় আহত দুই সাংবাদিক। বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে

রক্তিম হাসান অভিযোগ করেন, ‘মহিউদ্দিন সিফাতের নেতৃত্বাধীন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা দীর্ঘক্ষণ ৬ দফা স্তম্ভের সামনে দাঁড়িয়ে থেকে আমাদের পথ আটকে রাখেন। এ জন্য উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে আমরা শ্রদ্ধা নিবেদন করতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়েছে।’

মহিউদ্দিন সিফাত অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কোনো ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর সঙ্গে নয়, কয়েকজন পুলিশ সদস্যের সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে।

এদিকে হামলার শিকার দুই সংবাদকর্মী হলেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী আজম খান ও একই বিভাগের শিক্ষার্থী তরিকুল ইসলাম। আহত আজম খান বলেন, ‘ছাত্রলীগের দুই পক্ষের হাতাহাতির ঘটনার ছবি তুলতে গেলে আমাদের মারধর করা হয়েছে।’

তবে এই অভিযোগ ছাত্রলীগের দুটি পক্ষই অস্বীকার করেছে।

বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, হাতাহাতির ঘটনার পর ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।