বগুড়ায় প্রতিপক্ষের হামলায় আহত জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাকবীর ইসলাম খান পাঁচ দিন পর মারা গেছেন। আজ মঙ্গলবার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের উপপরিচালক আবদুল ওয়াদুদ।
শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক আবদুল ওয়াদুদ প্রথম আলোকে বলেন, তাকবীর ইসলাম খানকে মারধর করে আহত করা ছাড়াও ছুরিকাহত করা হয়। তাঁকে আহত অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি ঘটলে গতকাল সোমবার তাঁকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউত) স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ বেলা ৩টা ১০ মিনিটের দিকে তিনি মারা যান।
পুলিশ ও তাকবীরের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার ধুনট উপজেলায় ছাত্রলীগের দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি সমাবেশকে কেন্দ্র করে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। সেখানে ছাত্রলীগের ডাকা বিক্ষোভ সমাবেশে যাওয়ার পথে জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক তাকবীর ইসলামের মোটরসাইকেলে ধাক্কা লাগে জেলা ছাত্রলীগের সদস্য জাহিদ হাসানের মোটরসাইকেলের। এতে দুই নেতার মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা ও কথা-কাটাকাটি হয়।
এর জেরে ধুনট থেকে বগুড়া শহরের সাতমাথায় ফেরার পর সরকারি আজিজুল হক কলেজ ছাত্রলীগের নেতা আবদুর রউফ ও তাঁর সমর্থকদের সঙ্গে তাকবীর ইসলাম ও তাঁর সমর্থকদের সংঘর্ষ বাধে। একপর্যায়ে তাকবীর ইসলাম খানকে ছুরিকাহত করা হয়।
তাকবীর ইসলাম খানের ওপর হামলার ঘটনায় গত শনিবার বগুড়া সদর থানায় তাঁর মা ও শহরের মালতিনগর দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা আফরোজা ইসলাম বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। এই মামলায় বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রউফ, জেলা ছাত্রলীগের সদস্য জাহিদ হাসানসহ সাতজনকে আসামি করা হয়। ওই মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৩০ থেকে ৩৫ জনকে আসামি করা হয়।
গত বৃহস্পতিবার রাত নয়টার দিকে তাকবীর ইসলাম জিলা স্কুলের প্রধান ফটকের পশ্চিম পাশে বন্ধুদের সঙ্গে চা পান করছিলেন। এ সময় আসামিরা দলবদ্ধ হয়ে তাকবীর ইসলামের মাথায় আঘাত ও ছুরিকাঘাত করে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত বৃহস্পতিবার রাত নয়টার দিকে তাকবীর ইসলাম জিলা স্কুলের প্রধান ফটকের পশ্চিম পাশে বন্ধুদের সঙ্গে চা পান করছিলেন। এ সময় আসামিরা দলবদ্ধ হয়ে তাকবীর ইসলামের মাথায় আঘাত ও ছুরিকাঘাত করে।
বৃহস্পতিবারের সংঘর্ষের ঘটনায় ছাত্রলীগের সরকারি আজিজুল কলেজ শাখার কর্মী ও শাজাহানপুর উপজেলার শৈলধুকড়ী গ্রামের বাসিন্দা সোহাগ হোসেন বাদী হয়ে গত শনিবার তাকবীর ইসলামসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ এবং ২০-২৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে পাল্টা মামলা করেছেন।
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবীর প্রথম আলোকে বলেন, গত বৃহস্পতিবার ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মারামারির ঘটনায় শনিবার থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।