বগুড়ায় বড় লাফে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত মানুষ শনাক্তের সংখ্যা প্রায় আট শর কাছে পৌঁছে গেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এ জেলায় ১৬১ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। রোববার রাত ৮টা পর্যন্ত জেলায় সরকারি হিসাব অনুযায়ী কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৯০। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় কোভিডে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে গত তিন দিনে (৭২ ঘণ্টায়) কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল পাঁচ।
বগুড়ার ডেপুটি সিভিল সার্জন মোস্তাফিজুর রহমান আজ রোববার রাতে প্রথম আলোকে জানান, শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ল্যাবরেটরিতে বগুড়া জেলার ১৮৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাতে বগুড়ার ৪১ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়। অন্যদিকে টিএমএসএস মেডিকেল কলেজে মোট ৪২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে বগুড়ার ৩৫টি নমুনার মধ্যে ১৮ জনের পজিটিভ প্রতিবেদন আসে। বাকি সাতটি নমুনার মধ্যে নওগাঁর একজনের করোনা শনাক্ত হয়। এই দুই ল্যাবে বগুড়ার শনাক্ত ৫৯ জনের মধ্যে ৫ শিশু ও ১২ নারী রয়েছেন।
ডেপুটি সিভিল সার্জন মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এর বাইরে বগুড়া জেলা থেকে সংগ্রহ করা ৫৫০টি নমুনা ঢাকার একটি পিসিআর ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। এই নমুনার মধ্যে ১০২ জনের পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। এই নমুনাগুলো ৩০ ও ৩১ মে সংগ্রহ করা হয়েছিল। তিনি জানান, এ পর্যন্ত জেলায় ৮ হাজার ৯৩২টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬ হাজার ৪৪২টি নমুনার ফল পাওয়া গেছে। করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন ৭৯০ জন। এর মধ্যে ৪৫ পুলিশ, ১৫ কারারক্ষী এবং ৩৫ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী আছেন।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, জেলার মধ্যে বগুড়া শহরে সর্বোচ্চ ৫১৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। অন্য উপজেলার মধ্যে শাজাহানপুরে ৫৩ জন, গাবতলীতে ৪৫, কাহালুতে ২৭, শেরপুরে ৪৩, শিবগঞ্জে ১৫, আদমদীঘিতে ১২, সারিয়াকান্দিতে ২৩, সোনাতলায় ১৯, দুপচাঁচিয়ায় ১৫, ধুনটে ১৪ এবং নন্দীগ্রাম উপজেলায় ১০ জন আছেন। শনাক্ত হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৫৬২ পুরুষ, ১৮০ নারী ও ৪৮ শিশু রয়েছে। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৫৩ জন।
ডেপুটি সিভিল সার্জন মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন এক নারী (৫৯) আজ রোববার মারা গেছেন। তাঁর বাড়ি বগুড়া পৌর শহরের কলোনি এলাকায়। এ নিয়ে গত ৭২ ঘণ্টায় জেলার সরকারি-বেসরকারি দুটি হাসপাতালের আইসোলেশনে কোভিড সংক্রমিত হয়ে দুজন মুক্তিযোদ্ধা, একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা, একজন কলেজশিক্ষকসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এ পর্যন্ত জেলার কোভিডে মৃত্যু হয়েছে সাতজনের। উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ১৩ জন।
এ হিসাবের বাইরে করোনায় সংক্রমিত হয়ে ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল ও মুগদা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন বগুড়ার একজন চিকিৎসক, একজন সাংবাদিক, একজন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান, একজন পুলিশ ও একজন আনসার কর্মকর্তা।