সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের (এসআইবিএল) প্রায় সোয়া ৩১ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বগুড়া পৌরসভা নির্বাচনের আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আবদুল মান্নান আকন্দের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
গতকাল বুধবার বগুড়ার সিনিয়র স্পেশাল জজ এমরান হোসেন চৌধুরীর আদালতে দুদকের করা ওই মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন ধার্য ছিল। মামলার অন্য আট আসামি আদালতে হাজির হলেও আবদুল মান্নান আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন প্রার্থনা করেন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। একই সঙ্গে আদালত ৯ আসামির বিষয়ে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন।
আবদুল মান্নান বগুড়া শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান জেলা ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও ট্যাংকলরি মালিক সমিতির সভাপতি। তিনি বগুড়া পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে জগ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
বগুড়া আদালতের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সরকারি কৌঁসুলি আবুল কালাম আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, ২০০৮ সালের ২৩ অক্টোবর থেকে পরবর্তী তিন বছরে এসআইবিএলের বগুড়া শাখা থেকে তৎকালীন ব্যবস্থাপক, ২ কর্মকর্তা, ৬ ব্যবসায়ীসহ ৯ জন পরস্পর যোগসাজশে বিভিন্ন গ্রাহকের নামে ভুয়া ঋণহিসাব খুলে ৩১ কোটি ১৯ লাখ ৪৯ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন। ওই ঘটনায় এসআইবিএলের বগুড়া শাখার তৎকালীন ব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে ২০১১ সালে দুদক আইনে মামলা করেন। পরবর্তী সময়ে দুদক মামলাটি তদন্ত করে এবং ২০১৭ সালে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়।
অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিরা হলেন এসআইবিএলের সাবেক ব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলাম, সাবেক ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট (বর্তমানে বরখাস্ত) আতিকুল কবির, সাবেক এক্সিকিউটিভ অফিসার (বর্তমানে বরখাস্ত) মাহবুবুর রহমান, ব্যবসায়ী আকতার হোসেন মামুন, জহুরুল হক মোমিন, এনামুল হক বাবু, মাকসুদুলম আলম খোকন, ফেরদৌস আলম ও বগুড়া শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শুকরা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আবদুল মান্নান আকন্দ।
অভিযোগপত্র জমার পর ২০১৬ সালের ৪ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। ওই বছরের ১৬ এপ্রিল আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে এসআইবিএলের সাবেক ব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলাম ও আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল মান্নান আকন্দকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। কিছুদিন কারাগারে থাকার পর জামিন পান তাঁরা।
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ূন কবির প্রথম আলোকে বলেন, আবদুল মান্নান আকন্দের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা এখনো থানায় পৌঁছায়নি।
এ বিষয়ে জানার জন্য যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে আবদুল মান্নানের ব্যবহৃত দুটি মুঠোফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে।