বকগুলো ফাঁদ পেতে ধরেছিলেন শিকারি। নিয়ে যাচ্ছিলেন বাড়িতে। তা দেখতে পেয়ে পাখিগুলোসহ শিকারিকে নিয়ে যাওয়া হয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে। সেখানে ভুল স্বীকার করে কান্নাকাটি করায় শিকারিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আর বকগুলো উড়িয়ে দেওয়া হয় আকাশে।
আজ বুধবার এ ঘটনা ঘটেছে সুনামগঞ্জের ধরমপাশা উপজেলায়। পাখিগুলো ধরেছিলেন হলিদাকান্দা গ্রামের ফজলুল হক (২৬)। তিনি আর কখনো পাখি না ধরার অঙ্গীকার করেছেন।
ফজলুল হক বলেন, ‘হান হাইত্তা হক্কি মারি (ফাঁদ পেতে পাখি মারি)। এইডার লাইগ্যা জেল-জরিমানা আছে, জানা আছিইন না। না জাইননা ভুল করছি। জীবনে যত দিন বাঁইচ্চা থাহাম, অত দিন আর হক্কি মারতাম না।’
হান হাইত্তা হক্কি মারি (ফাঁদ পেতে পাখি মারি)। এইডার লাইগ্যা জেল-জরিমানা আছে, জানা আছিইন না।ফজলুল হক, হলিদাকান্দা গ্রাম, ধরমপাশা
উপজেলা প্রশাসন, প্রত্যক্ষদর্শী ও পাখিশিকারির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চকিয়াচাপুর গ্রামের বাশাটি বিলে বক শিকারের উদ্দেশ্যে আজ ভোর সাড়ে চারটার দিকে হলিদাকান্দা গ্রামের ফজলুল হকসহ (২৬) কয়েকজন ফাঁদ পাতেন। সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত তাঁরা ৪০টি বক শিকার করেন। সকাল আটটার দিকে ফজলুল হক সেগুলো অটোরিকশায় করে নিয়ে যাচ্ছিলেন। উপজেলা সদরের আবদুল হেকিম চৌধুরী চত্বরের সামনের সড়কে গেলে ধরমপাশা গ্রামের এনামুল হক (৩৮) বিষয়টি দেখতে পান।
এনামুল পাখিসহ ফজলুলকে ইউএনওর কার্যালয়ে নিয়ে যান। সকাল নয়টার দিকে ইউএনও মো. মুনতাসির রহমান কার্যালয়ে আসেন। তিনি পাখি শিকার করা রাষ্ট্রীয় আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে ফজলুলকে জানান। তখন ফজলুল কান্নাকাটি করে ইউএনওর কাছে ক্ষমা চান। তিনি আর কোনো দিন পাখি শিকার করবেন না বলেও মৌখিকভাবে অঙ্গীকার করেন। ইউএনও ফাঁদগুলো ধ্বংস করে পাখিগুলো একে একে আকাশে উড়িয়ে দেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফজলুলের হাতে এক প্যাকেট খাদ্যসামগ্রীও তুলে দেওয়া হয়।
ইউএনও মো. মুনতাসির হাসান বলেন, মানবিক দিক বিবেচনা করে ওই পাখিশিকারিকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে তাঁর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া হবে।