ফরিদপুরে দ্বিধাবিভক্ত বিএনপির কর্মীদের উত্তেজনার মধ্যেই বিভাগীয় সমাবেশ হয়েছে। সমাবেশের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সংগঠনের দুই পক্ষের সমর্থকেরা নিজ নিজ নেতার নামে স্লোগানে পরিবেশ মুখর করে রাখে। তবে শেষ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে সামাবেশ হয়েছে।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে বিভাগীয় পর্যায়ে বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় বিএনপি। তারই অংশ হিসেবে আজ সোমবার বিকেলে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় (বিএনপির সাংগঠনিক বিভাগ) সমাবেশ হয়।
বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান। এতে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মাশুকুর রহমান ও সেলিমুজ্জামান, মহিলা দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক নায়াব ইউসুফ, যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি মাহাবুবুল হাসান ভুইয়া, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জহিরুল হক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোদাররেছ আলী প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে দেশের জনগণের নাভিশ্বাস উঠেছে। ‘বিএনপির এ সংগ্রাম শুধু বিএনপির নিজস্ব সংগ্রাম নয়’ মন্তব্য করে আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘এর জন্য আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এ সংগ্রামের সঙ্গে দলমত–নির্বিশেষে সব দল, সব মানুষকে শরিক করে জাতীয় সংগ্রাম গড়ে তুলতে হবে এবং এ দুঃশাসনের অবসান ঘটাতে হবে।’
ফরিদপুরে জেলা বিএনপির কমিটি নেই ২০২০ সালের ৪ সেপ্টেম্বর থেকে। তবে আছে বিরোধ। জেলা বিএনপি শামা ওবায়েদ ও নায়াব ইউসুফের নেতৃত্বে বিভক্ত। সমাবেশ চলাকালে এ বিরোধ প্রকট হয়ে দেখা দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রেসক্লাব চত্বরে সভা চলাকালে মঞ্চের পূর্ব পাশে নায়াব ইউসুফের সমর্থকেরা ও পশ্চিম পাশে শামা ওবায়েদের সমর্থকেরা অবস্থান নেন। যখন যে বক্তার নাম ঘোষণা করা হয়, তখন ওই নেতা যে অংশের অনুসারী, সেই অংশের লোকজন স্লোগান দিতে থাকে, অপর অংশ নীরব থাকে। বক্তব্য দিতে উঠে যে নেতা যাঁর অনুসারী তাঁকে সম্বোধন করেন, অন্য জনের নাম উল্লেখ পর্যন্ত করেননি।
এমন অবস্থার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বক্তব্যের সময় যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি মাহাবুবুল হাসান ভুইয়া বলেন, ‘বক্তব্য দেওয়ার সময় মঞ্চে যেসব নেতা উপস্থিত, তাঁদের সবার নাম উল্লেখ করে বক্তব্য দেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।’
সভাপতির বক্তব্যে শামা ওবায়েদ বলেন, ‘পছন্দের নেতা হোক বা না হোক, যখন যিনি বক্তব্য রাখবেন, তখন নেতা-কর্মীদের উচিত সবার পক্ষে স্লোগান দেওয়া। এখানে কেউ বিশেষ নেতা নয়, সবাই বিএনপির। আমি ফরিদপুর বিএনপিকে এ অবস্থায় দেখতে চাই।’