ফরিদপুরে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় মামলা হয়েছে কোতোয়ালি থানায়। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সোমবার দিবাগত রাতে তিন তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ওই কিশোরী বর্তমানে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) চিকিৎসাধীন।
নর্থ চ্যানেল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. মোস্তাকুজ্জামান জানান, রোববার রাত ১০টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে ফরিদপুর সদরের নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের একটি গ্রামে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করেন কয়েকজন। কিশোরীর বাবা একজন ট্রাকচালক। তিনি তিন মেয়ের বাবা। তিন বোনের মধ্যে ওই কিশোরী বড়। কিশোরীটি স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী।
পুলিশ অভিযান চালিয়ে সোমবার দিবাগত রাতে ফরিদপুর সদরের নর্থ চ্যানেল ও ডিক্রিরচর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে অভিযান চালিয়ে তিন তরুণকে গ্রেপ্তার করে। তাঁরা হলেন ডিক্রিরচর ইউনিয়নের আইজুদ্দিন মাতুব্বরের ডাঙ্গী গ্রামের অটোচালক আকাশ শেখ (১৮), একই এলাকার রাজমিস্ত্রির সহযোগী রনি শেখ (১৮) ও নর্থ চ্যানেল পূর্বডাঙ্গী গ্রামের ট্রলিচালক শিপন শেখ (১৯)।
মঙ্গলবার বেলা একটায় ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) জামাল পাশা। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, রোববার রাতে ফরিদপুর সদরের চর মাধবদিয়া ইউনিয়নে ওই গ্রামে কিশোরীটি জরুরি প্রয়োজনে বাড়ির বাইরে এলে পাশের নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের একটি গ্রাম থেকে চারজন তাকে মুখ চেপে একটি ইজিবাইকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করেন। পরে রাত সাড়ে ১১টায় কিশোরীকে একটি ফাঁকা মাঠে মুমূর্ষু অবস্থায় ফেলে রেখে যান। পরিবারের সদস্যরা কিশোরীকে উদ্ধার করে রাতেই ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কালজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের উপাধ্যক্ষ দিলরুবা জেবা বলেন, মুমূর্ষু অবস্থায় ওই কিশোরীকে রোববার দিবাগত রাতে হাসপাতালে আনা হয়। সোমবার তার অস্ত্রোপচার করা হয়। বর্তমানে ওই কিশোরী ওসিসিতে চিকিৎসাধীন। ধীরে ধীরে তার অবস্থার উন্নতি হচ্ছে।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল বলেন, ওই কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে সোমবার দিবাগত রাতে আকাশসহ অজ্ঞাতনামা চার-পাঁচজনকে আসামি করে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেছেন।
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ফরিদপুর সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার জানান, প্রযুক্তির সহায়তায় মামলার এজাহারভুক্ত আসামি আকাশ শেখকে সোমবার দিবাগত রাত ১টা ৫০ মিনিটে ফরিদপুর সদরের টেপাখোলা বেড়িবাঁধ এলাকায় থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁর দেওয়া তথ্য অনুয়ায়ী রাত আড়াইটায় রনিকে এবং রাত তিনটায় শিপনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল খায়ের বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার তিন আসামিকে মঙ্গলবার বিকেলে জেলার ১ নম্বর আমলি আদালতে হাজির করা হয়।