প্রেমের সম্পর্ক না রাখায় কলেজছাত্রীকে খুন, বাবা আহত

হত্যা
প্রতীকী ছবি

প্রেমের সম্পর্ক না রাখার জেরে প্রেমিকের ছুরিকাঘাতে সোহাগী আক্তার (২০) নামের এক কলেজছাত্রী খুন হয়েছেন। এ সময় নিহত ছাত্রীর বাবাও আহত হয়েছেন। আজ সোমবার শেরপুরের নকলার কায়দা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত সোহাগী উপজেলার কায়দা এলাকার শহিদুল ইসলামের (৫০) মেয়ে। তিনি সরকারি হাজী জালমামুদ কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। শহিদুলকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ঘটনায় পুলিশ আরিফুল ইসলাম (২৮) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে। আরিফুল নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা উপজেলার কুতুরপুর ইউনিয়নের পূর্ব সিয়ারচর লালখা গ্রামের আলী হোসেনের ছেলে।

কলেজছাত্রী সোহাগী আক্তার খুনের ঘটনায় নকলা থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। আজ সোমবার বিকেলে নিহত সোহাগীর মা মাজেদা বেগম বাদী হয়ে আরিফুল ইসলামকে আসামি করে মামলাটি করেন। পরে থানা–পুলিশ তাঁকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে শেরপুরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হাসান ভূঁইয়ার আদালতে আরিফুলকে সোপর্দ করে। নকলা থানার এসআই ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলক কুমার রায় এসব তথ্য জানিয়েছেন। এর আগে আজ দুপুরে জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে সোহাগীর লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত এপ্রিল মাসে মুঠোফোনের মাধ্যমে আরিফুলের সঙ্গে সোহাগীর পরিচয় হয়। পরে তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিছুদিন আগে আরিফুলের সঙ্গে সোহাগীর সরাসরি দেখা হয়। এর পর থেকে সোহাগী আরিফুলকে এড়িয়ে চলতেন এবং তাঁর সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলা বন্ধ করে দেন। এরপর গতকাল রোববার গভীর রাতে আরিফুল নারায়ণগঞ্জ থেকে নকলার কায়দা এলাকায় সোহাগীর বাড়িতে এসে কৌশলে রান্নাঘরে রাত যাপন করেন।

আজ ভোরে সোহাগীর বাবা শহিদুল ইসলাম ঘরের দরজা খুলে বাইরে বের হলে আরিফুল ছুরি দিয়ে তাঁকে এলোপাতাড়ি আঘাত করেন। এ সময় বাবা শহিদুলের চিৎকার শুনে সোহাগী এসে আরিফুলকে বাধা দেন। পরে আরিফুল সোহাগীকেও ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করেন। এতে বাবা-মেয়ে গুরুতর আহত হন।

পরে স্বজন ও প্রতিবেশীরা আহত বাবা-মেয়েকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সোহাগীকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। আর উন্নত চিকিৎসার জন্য শহিদুলকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

খবর পেয়ে নকলা থানার পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আরিফুলকে আটক করে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিটিও জব্দ করা হয়।

নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ মুশফিকুর রহমান আজ দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে। নিহত তরুণীর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আরিফুল বলেন, দুই মাস আগে থেকে সোহাগীর সঙ্গে মুঠোফোনে তাঁর কথা হতো। কিছুদিন আগে তাঁদের সরাসরি দেখা হয়। পরে কোনো কারণে সোহাগী তাঁর সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দেন। এ কারণে সোহাগীকে শায়েস্তা করার জন্য আরিফুল এ ঘটনা ঘটান বলে স্বীকার করেছেন।