তুরস্কের একটি হাসপাতালে প্রধান হিসাবরক্ষক হিসেবে কাজ করতেন তুরস্কের তরুণী আয়েশা ওজতেকিন। ২০১৮ সালে ওই হাসপাতালে কর্মজীবন শুরু করেন ময়মনসিংহের তরুণ হুমায়ুন কবির। কাজ করতে গিয়ে পরিচয় হয় তাঁদের, পরিচয় থেকে প্রণয়। এবার বিয়ে করে ঘর বাঁধলেন তাঁরা।
গতকাল শুক্রবার ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলা শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে হয় আয়েশা–হুমায়ুনের। পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজন এই বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, হুমায়ুন কবিরের বাড়ি ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায়। তিনি রংপুর ক্যাডেট কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করার পর ২০১০ সালে বৃত্তি নিয়ে তুরস্কে পড়তে যান। চিকিৎসাবিজ্ঞানে ২০১৭ সাল পর্যন্ত পড়াশোনা করেন তিনি। এরপর ২০১৮ সাল থেকে আনতালিয়া শহরের লাইফ হসপিটালে শুরু হয় তাঁর কর্মজীবন। ওই হাসপাতালেই প্রধান হিসাবরক্ষক হিসেবে চাকরি করতেন তুর্কি তরুণী আয়েশা ওজতেকিন। সেই চাকরির সুবাদে পরিচয় দুজনের। পরিচয় থেকে দুজনই জড়িয়ে পড়েন প্রেমের সর্ম্পকে।
হুমায়ুন কবির বলেন, ‘তুরস্কে সাধারণত এই উপমহাদেশের মানুষ খুব কম থাকেন। আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি একেবারেই আলাদা। ভাষা আর সংস্কৃতি বিষয়ে জানার জন্য প্রথমে আয়েশার সঙ্গে আমার কিছুটা ঘনিষ্ঠতা হয়, তারপর প্রেম আর বিয়ে।’ বিয়ের ব্যাপারে হুমায়ুনের বাবা প্রথমে আপত্তি করলে মা শুরু থেকেই আয়েশাকে ভীষণ পছন্দ করেন বলে তিনি জানান।
আয়েশা ওজতেকিন বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের মন খুব নরম। এখানকার মানুষ ভীষণ অতিথিপরায়ণ। যে দিন প্রথম বাংলাদেশে আসি সেদিন আমাকে স্বাগত জানাতে অন্তত ৫০ জন বিমানবন্দরে যান। এটি ভীষণ আনন্দদায়ক ছিল। বিয়ের পর আমি এ পরিবারের একজন সদস্য হিসেবে দ্রুত নিজেকে মানিয়ে নেব।’ বিয়েতে শুরুতে তাঁর মা–বাবা রাজি ছিলেন না। তাঁদের বুঝিয়ে রাজি করাতে হয়েছে বলে জানান তিনি।
বিদেশি পুত্রবধূ পেয়ে আনন্দিত হুমায়ুন কবিরের মা–বাবা। তাঁরা জানান, এখানে আসার পর থেকে পরিবারের সবার সঙ্গে খুব মিশে চলছে আয়েশা। সবাইকে আপন করে নিয়েছে।
হুমায়ুন কবির জানান, ভবিষ্যতে স্ত্রীকে নিয়ে বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের ইচ্ছা আছে তাঁর, তবে আপাতত নয়। আগামী ১০ দিন ছুটি আছে। ছুটি শেষে চলে যেতে হবে তুরস্কে। সেখানে তিনি আরও পড়াশোনা করছেন। পড়াশোনা শেষ হলে এক সময় স্থায়ীভাবে বাংলাদেশে বসবাস করতে চান তিনি। আয়েশাও বাংলাদেশে থাকার ব্যাপারে আগ্রহী।