প্রিয়জনদের দেখা মেলে বউ মেলায়

ঐতিহ্যবাহী বউ মেলায় আসা দর্শনার্থী। শুক্রবার দুপুরে বগুড়ার ধুনট পৌর এলাকার সরকার পাড়া ইছামতী নদীর তীরে
 ছবি: প্রথম আলো

বন্ধু-স্বজন ও প্রিয়জনদের সঙ্গে দেখা হওয়ার সুযোগ মেলে ঐতিহ্যবাহী বউ মেলায়। বগুড়ার ধুনট পৌর এলাকার সরকারপাড়া ইছামতী নদীর তীরে বহু বছর ধরে বিজয়া দশমীর দিনে এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রতিবছরের মতো এবারও বসেছিল বউ মেলা। দীর্ঘদিন যাঁদের দেখা হয়নি, মেলা উপলক্ষে তাঁদের দেখা হয়েছে, হয়েছে শুভেচ্ছা বিনিময়।

মেলায় আসা বেশির ভাগ মানুষ নারী। ফলে স্থানীয়ভাবে এটি বউ মেলা নামে পরিচিত। মেলায় সব ধর্মের মানুষ সমবেত হন। এর মাধ্যমে প্রতিবছর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেলবন্ধন তৈরি হয়। মেলা ও পূজা উপলক্ষে আশপাশের বাড়িতে বাড়িতে বানানো হয়েছে খই, মুড়কি, নারকেল–চিড়া-মুড়ির নাড়ু।

শুক্রবার দুপুরে বউ মেলায় গিয়ে দেখা যায়, পণ্যের পসরা নিয়ে এসেছেন নানা এলাকার ব্যবসায়ীরা। মিষ্টান্ন, শিশুতোষ খেলনা, চুড়ি, দুল, ফিতা, আলতা থেকে গৃহস্থালির বিচিত্র জিনিস। বাহারি জিলাপি ভাজা হচ্ছে ২০টির বেশি দোকানে। বিক্রি হচ্ছে ধুমধামে। জামাতা ও স্বজনদের আমন্ত্রণ করে মেলায় আপ্যায়ন করতে দেখা গেল।

মেলায় আসা দর্শনার্থী হাসনা খাতুন বলেন, মেলায় নারীদের প্রসাধনসামগ্রী ও অন্যান্য জিনিস মনের মতো কেনা যায়। তাই প্রতিবছরের মতো এবারও তিনি মেলায় কেনাকাটা করতে এসেছেন।

মেলার আয়োজক কমিটির সভাপতি পার্থ কুমার সেন বলেন, দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রতিমা বিসর্জনের দিনে প্রায় শত বছরের বেশি সময় ধরে এক দিনের জন্য এই মেলা বসানো হয়। প্রতিবছরের মতো এবারও বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ এসে মেলায় আনন্দ করেছে। সন্ধ্যায় প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে মেলার সমাপ্তি হয়।

দুর্গাপূজা উপলক্ষে বসানো এই মেলায় আগে থেকেই যথেষ্ট নিরাপত্তাব্যবস্থা ছিল বলে জানিয়েছেন ধুনট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জাহিদুল হক। তিনি বলেন, মানুষের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেনাকাটার জন্য পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল।

ধুনট পৌরসভার মেয়র এ জি এম বাদশা বলেন, গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী মেলার ইতিহাস ধরে রাখতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বসেছিল বউ মেলা। সরকারপাড়া গ্রামের মানুষ ঐতিহ্য ধরে রাখতে প্রতিবছর স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে অব্যাহত রেখেছেন এই মেলার আয়োজন।