প্রশ্নপত্র ফাঁসে গ্রেপ্তার মাহবুবা এবার ভাইস চেয়ারম্যান পদ থেকেও সাময়িক বরখাস্ত

মাহবুবা নাসরিন
ছবি: সংগৃহীত

বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার মাহবুবা নাসরিন ওরফে রূপা এবার উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন। তিনি বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান (প্যানেল চেয়ারম্যান-১) ছিলেন। এর আগে তিনি দুপচাঁচিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ থেকেও বহিষ্কার হন।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে জারি করা এক চিঠিতে দুপচাঁচিয়া উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুবা নাসরিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব মমতাজ বেগম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে মাহবুবা নাসরিনকে উপজেলা পরিষদ আইনের ১৩–এর(১)-গ ধারায় সাময়িক বরখাস্ত করার কথা জানানো হয়েছে। ৫ জুন মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এ–সংক্রান্ত চিঠি আপলোড করা হলেও ১৩ জুন বগুড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ও গতকাল বৃহস্পতিবার দুপচাঁচিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে পৌঁছায়।

ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের দায়ে জড়িত থাকার অভিযোগে মাহবুবা নাসরিনকে মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ গত ২১ জানুয়ারি গ্রেপ্তার করেছে। মাহবুবা নাসরিনের এই কর্মকাণ্ড দুর্নীতি, অসদাচরণ এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের সামিল।

বগুড়ার জেলা প্রশাসক মো. জিয়াউল হক গতকাল রাত আটটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘মাহবুবা নাসরিনকে উপজেলা পরিষদ আইনে স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ১৩ জুন মন্ত্রণালয়ের চিঠিটি পেয়েছি। তবে চিঠি ইস্যুর তারিখ থেকেই মন্ত্রনালয়ের সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে।’

মাহবুবা নাসরিন দুপচাঁচিয়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ছাড়াও বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগ এবং দুপচাঁচিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলেন। এ বছরের ২১ জানুয়ারি প্রতিরক্ষা মহাহিসাব নিরীক্ষকের কার্যালয়ের অধীন ‘অডিটর’ নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত থাকার প্রশ্নফাঁসে ব্যবহৃত ডিজিটাল ডিভাইসসহ ১০ সদস্যের চক্রের সঙ্গে ঢাকা থেকে মাহবুবাকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। তবে মাহবুবা নাসরিন বর্তমানে জামিনে রয়েছেন বলে দুপচাঁচিয়া উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।

গ্রেপ্তারের বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশের পর ২৩ জানুয়ারি বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার দায়ে তাঁকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করে। এক দিন পর মাহবুবা নাসরিনকে দুপচাঁচিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ থেকেও বহিষ্কার করা হয়।

গ্রেপ্তারের পর ডিবি পুলিশ দাবি করে, মূলত পরীক্ষার্থী হিসেবে কেন্দ্রে হাজির থেকে ‘ডিজিটাল ডিভাইস’ ব্যবহার করে টাকা নেওয়া চাকরিপ্রার্থীদের প্রশ্নের উত্তর লিখতে মাহবুবা নাসরিন সহায়তা করতেন। রাজনীতিকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে তিনি নানা অপরাধে জড়িয়েছেন।

মাহবুবা ইডেন কলেজে পড়ার সময় ছাত্রলীগের নেত্রী ছিলেন। স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করার পর দুপচাঁচিয়ায় নিজ এলাকায় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন মাহবুবা। এরপর ২০১৯ সালের মার্চে দুপচাঁচিয়া উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। নির্বাচনের পরপরই তিনি জেলা ও আওয়ামী লীগের সদস্য হন।