জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) প্রশাসনের নির্দেশ উপেক্ষা করে হলে অবস্থান করছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার সকাল ১০টায় হল ছাড়ার নির্দেশের সময় শেষ হওয়ার পরও শিক্ষার্থীরা হল ছাড়েননি। বরং আজ দুপুরে নতুন করে আরও একটি হলের তালা ভেঙে শিক্ষার্থীরা ভেতরে ঢুকে পড়েছেন।
পরে দুপুর ১২টার দিকে ছেলেদের আটটি হলে যান হলের প্রাধ্যক্ষসহ হল প্রশাসন। তাঁরা শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, যে শিক্ষার্থীরা হলে আছেন, তাঁদের বেশির ভাগই গেরুয়া এলাকায় থাকতেন। এই শিক্ষার্থীরা হল ছাড়লে তাঁদের আবার গেরুয়ায় যেতে হবে। শিক্ষার্থীদের ওপর গ্রামবাসীর হামলার ৪৮ ঘণ্টা পার হলেও হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এ অবস্থায় গেরুয়ায় আবার যাওয়া নিরাপদ নয়। এ ছাড়া অনেক শিক্ষার্থী এখনো গেরুয়ায় আটকে আছেন। সেখানে শিক্ষার্থীরা যেসব বাসা ও মেসে থাকতেন, সেগুলোর বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। খাবারের হোটেলসহ নিত্যপণ্যের দোকানগুলো বন্ধ হওয়ায় নানা অসুবিধায় আছেন তাঁরা।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, এ রকম অরাজক পরিস্থিতিতে গেরুয়া এলাকায় ফিরে যাওয়া শিক্ষার্থীদের পক্ষে সম্ভব নয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিরাপদ আবাসস্থল নিশ্চিত না করা পর্যন্ত হল ত্যাগ করা সম্ভব নয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাধ্যক্ষ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোতাহার হোসেন বলেন, হল প্রভোস্টরা শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের অনুরোধ জানিয়েছেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা হল ত্যাগ না করার ঘোষণা দিলে প্রভোস্টরা ফিরে আসেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আ ফ ম কামালউদ্দিন হলের প্রাধ্যক্ষ ও ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের হলত্যাগের জন্য অনুরোধ করেছি। তারা হল ছাড়তে রাজি হয়নি। এখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।’
বেলা ১২ টার পর থেকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্ত্বরে জড়ো হন। সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তাঁরা। মিছিলটি বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের সামনে গিয়ে শেষ হয়। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা এই হলের তালা ভেঙে ফেলেন। পরে বঙ্গমাতা হলের আবাসিক ছাত্রীরা হলে উঠে যান। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৬টি আবাসিক হলের মধ্যে ৯টিতে শিক্ষার্থীরা ঢুকে পড়ল।
এর আগে গতকাল রোববার দিবাগত রাত একটায় শিক্ষার্থীদের হলত্যাগের নির্দেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরে সকাল ১০টায় জরুরি প্রশাসনিক বৈঠকে বসে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বৈঠকে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগ করার জন্য নিজ নিজ হল প্রভোস্টকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।