সিনহা হত্যা মামলা

প্রদীপ-লিয়াকতের ফোন রেকর্ড পায়নি তদন্ত কমিটি

সিনহা মো. রাশেদ খান
ছবি: সংগৃহীত

অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যার আগে-পরে প্রধান দুই আসামি টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক লিয়াকত আলীর কথোপকথনের ফোন রেকর্ড পায়নি তদন্ত কমিটি।

এই সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করেই আজ সোমবার বেলা ১১টায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দিচ্ছে।

জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির প্রধান চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান গতকাল রোববার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘যেসব মানুষের ফোন রেকর্ড আমাদের শোনার প্রয়োজন ছিল, সেটা আমরা পাইনি। কোনো ফোন রেকর্ডই পাইনি। আমরা লিখেছিলাম, কিন্তু সাড়া পাইনি।’ তবে রেকর্ড না পাওয়ার দায় কার, তা বলতে চাননি কমিটিপ্রধান।

প্রদীপ কুমার দাশ ও লিয়াকত আলী

মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘পাশাপাশি চলমান ফৌজদারি মামলার কারণে স্বাভাবিকভাবেই সংশ্লিষ্ট অনেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাই জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে আইনি প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে। চাইলেই আমাদের পক্ষে আসামিদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।’ তিনি বলেন, এসব সীমাবদ্ধতা তাঁদের হত্যার ঘটনার উৎস ও কারণ নির্ধারণে প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়ায়নি।

সিনহা হত্যার পর গঠিত চার সদস্যের এই কমিটিকে ঘটনার উৎস ও কারণ অনুসন্ধান এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে করণীয়সংক্রান্ত সুপারিশ করতে বলা হয়েছিল। এই পরিপ্রেক্ষিতে কমিটি কিছু মৌলিক প্রশ্নের জবাব খুঁজেছিল। এর মধ্যে অন্যতম ছিল ঘটনাটি তাৎক্ষণিক নাকি পূর্বপরিকল্পিত এবং নির্দেশদাতা কে, তা খুঁজে বের করা।

জানতে চাইলে এ প্রসঙ্গে মিজানুর রহমান বলেন, ঘটনা তাৎক্ষণিক নাকি পূর্বপরিকল্পিত, তা রিপোর্টে রয়েছে। গণমাধ্যমে বলা যাবে না।

প্রস্তুত করা মূল তদন্ত প্রতিবেদনটি ৮০ পৃষ্ঠার। এতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে ১৩টি সুপারিশ রয়েছে। এ ছাড়া মূল প্রতিবেদনের সঙ্গে ২১ পৃষ্ঠার ছবি ও ৫৮৬ পৃষ্ঠার বিভিন্ন সাক্ষীর সাক্ষ্য থাকবে। এর বাইরে দুটি পেনড্রাইভে কিছু ভিডিও চিত্রও সংযোজন করে জমা দেওয়া হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, আজ মন্ত্রণালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময় কমিটির চার সদস্যেরই উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। কমিটির অপর তিন সদস্য হলেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শাহজাহান আলী, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লে. কর্নেল এস এম সাজ্জাদ হোসেন ও বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর প্রতিনিধি অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক জাকির হোসেন খান।

গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের মারিশবুনিয়া পাহাড়ে ভিডিও চিত্র ধারণ করে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকার নীলিমা রিসোর্টে ফেরার পথে শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা।

চার পুলিশ রিমান্ডে
সিনহা হত্যা মামলার আরও চার আসামিকে গতকাল বেলা ১১টায় দ্বিতীয় দফায় চার দিনের রিমান্ডে নিয়েছে মামলার তদন্তকারী সংস্থা র‍্যাব। তাঁরা হলেন টেকনাফ থানা-পুলিশের চার সদস্য এসআই লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন ও আবদুল্লাহ আল মামুন।

জেলা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক মোকাম্মেল হোসেন জানান, বেলা ১১টার দিকে র‍্যাবের গাড়ি কারাগারে এসে চার আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে গেছে।