সেন্টমার্টিন নৌপথে চলাচলকারী পর্যটকবাহী জাহাজ
সেন্টমার্টিন নৌপথে চলাচলকারী পর্যটকবাহী জাহাজ

৮ মাস পর জাহাজ চলাচল শুরু

প্রথম দিনেই সেন্ট মার্টিনে গেলেন সাড়ে ৮০০ পর্যটক

২৪০ দিন বা ৮ মাস বন্ধ থাকার পর আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার পর থেকে টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথে আবারও পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। প্রথম দিনে কেয়ারি সিন্দবাদ ও এমভি ফারহান ক্রুজ নামের দুটি জাহাজে করে ৮৪৪ পর্যটক সেন্ট মার্টিন গেছেন। গত ১৮ মার্চ থেকে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে পর্যটক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সুরক্ষার কথা বিবেচনা করে টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথে জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিল জেলা প্রশাসন।

সরেজমিন দেখা গেছে, সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশে পর্যটকবাহী জাহাজ ছাড়ার জন্য নাফ নদীর তীরঘেঁষা টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়া এলাকায় নদীবন্দর স্থাপিত হয়েছে। এখানে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) একটি জেটি, পন্টুন ও একটি যাত্রীছাউনি এবং টয়লেট স্থাপন করেছে।

আজ সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন জেলা ও বিভাগীয় শহর থেকে পর্যটকেরা বাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কারযোগে টেকনাফে আসেন। সেন্ট মার্টিন যেতে পর্যটকেরা জাহাজের টিকিট সংগ্রহ করেন। সকাল সাড়ে ৯টার পর কেয়ারি সিন্দবাদ ৩৩৭ জন ও এমভি ফারহান ক্রুজ ৫০৭ জন পর্যটক নিয়ে সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশে রওনা দেয়। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে কিছু পর্যটক ফিরে এলেও চার শতাধিক পর্যটক রাত যাপন করতে সেন্ট মার্টিন থেকে যান।

পর্যটকদের কথা চিন্তা করে তাঁদের আবারও পর্যটক পারাপারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার থেকে প্রতিদিন সকাল সাড়ে নয়টায় টেকনাফ থেকে সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশে জাহাজ ছেড়ে যাবে।
মোহাম্মদ শাহ আলম ও তোফায়েল আহমেদ, ব্যবস্থাপক, কেয়ারি সিন্দবাদ ও এমভি ফারহান ক্রুজ জাহাজ

বিআইডব্লিউটিএ টেকনাফের সমন্বয় কর্মকর্তা ট্রাফিক সুপারভাইজার মোহাম্মদ জহির উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, চলতি মৌসুমে এ নৌপথে চলাচলের জন্য কর্তৃপক্ষ বর্তমানে কেয়ারি সিন্দবাদ জাহাজকে গত ১ অক্টোবর থেকে ১২ ডিসেম্বর এবং এমভি ফারহান ক্রুজকে ৪ নভেম্বর থেকে আগামী বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলাচলের অনুমতি দিয়েছে। তবে কয়েক দিনের মধ্যে কেয়ারি ক্রুজ অ্যান্ড ডাইন জাহাজও চলাচল শুরু করবে।

টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে চলাচলকারী পর্যটকবাহী কেয়ারী সিন্দবাদ জাহাজ

কেয়ারি সিন্দবাদের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শাহ আলম ও এমভি ফারহান ক্রুজের ব্যবস্থাপক তোফায়েল আহমেদ বলেন, পর্যটকদের কথা চিন্তা করে তাঁদের আবারও পর্যটক পারাপারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার থেকে প্রতিদিন সকাল সাড়ে নয়টায় টেকনাফ থেকে সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশে জাহাজ ছেড়ে যাবে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বিআইডব্লিউটিএর অনুমতি সাপেক্ষে এ নৌপথে আবারও জাহাজ চলাচল শুরুর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণের কথা বিবেচনা করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাত্রী পরিবহনের শর্ত আরোপ করা হয়েছে।

আট মাস বন্ধ থাকার পর জাহাজ চলাচলে সেন্ট মার্টিনে এখন সাজসাজ রব। দুপুরে পর্যটকসহ দুটি জাহাজ দ্বীপে পৌঁছালে সব শ্রেণি–পেশার মানুষের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। প্রথম দিনেই রাত যাপন করতে চার শতাধিক পর্যটক সেন্ট মার্টিন রয়ে গেছেন।
নুর আহমদ, ইউপির চেয়ারম্যান, সেন্ট মার্টিন

ইউএনও আরও বলেন, সেন্ট মার্টিনে হোটেল, কটেজসহ প্রতিটি আবাসিক ও খাবার হোটেলে মূল্যতালিকা টাঙানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জাহাজ কর্তৃপক্ষকে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন না করার পাশাপাশি ভাড়ার তালিকা টাঙানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভাটার সময় কোনো পর্যটক যাতে সেন্ট মার্টিন সৈকতের পানিতে না নামেন, সে ব্যাপারে প্রচারণা চালানোর জন্য ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানকে তাগিদ দেওয়া হয়েছে।

সেন্ট মার্টিন ইউপির চেয়ারম্যান নুর আহমদ বলেন, আট মাস বন্ধ থাকার পর জাহাজ চলাচলে সেন্ট মার্টিনে এখন সাজসাজ রব। দুপুরে পর্যটকসহ দুটি জাহাজ দ্বীপে পৌঁছালে সব শ্রেণি–পেশার মানুষের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। প্রথম দিনেই রাত যাপন করতে চার শতাধিক পর্যটক সেন্ট মার্টিন রয়ে গেছেন।