সুজানগর পৌরসভা নির্বাচন

প্রতীক বরাদ্দের আগের দিন সরে দাঁড়ালেন বিএনপির প্রার্থী

পৌরসভা নির্বাচন
প্রতীকী ছবি

পাবনার সুজানগর পৌরসভা নির্বাচন দুই দফা স্থগিতের পর ৩১ মার্চ ভোট গ্রহণের নতুন দিন ধার্য হয়েছে। তবে প্রতীক বরাদ্দের আগের দিন আজ সোমবার নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বিএনপির প্রার্থী ও পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুল হুদা কামাল বিশ্বাস। দুপুরে তিনি রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। ফলে নির্বাচনে মেয়র পদে আর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল করিম বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে চলেছেন।

বিকেলে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. রওশন আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নির্দেশনা অনুযায়ী মেয়র ভোট না হলেও কাউন্সিলর পদে নির্ধারিত দিনে ভোট গ্রহণ হবে বলেও জানিয়েছেন এ কর্মকর্তা।

মেয়র পদে আর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল করিম বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে চলেছেন।

সুজানগর পৌরসভা নির্বাচনে গত ১৬ জানুয়ারি প্রথম দফায় ভোট গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ হয়। সে অনুযায়ী প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দেন। এর মধ্যে গেজেটে প্রকাশিত পৌর এলাকার বর্ধিত শহর অংশর ভোটার তালিকায় হালনাগাদের লক্ষ্যে দুজন ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আদালতে রিট আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৫ ডিসেম্বর উচ্চ আদালতের দুজন বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ নির্বাচনের ওপর তিন মাসের স্থগিতাদেশ দেন। এতে নির্বাচন স্থগিত হয়। পরবর্তী সময়ে উচ্চ আদালতের আপিলেড ডিভিশন স্থগিতাদেশ খারিজ করলে দ্বিতীয় দফায় ৩০ জানুয়ারি ভোট গ্রহণের নতুন দিন ধার্য হয়। কিন্তু ভোট গ্রহণের ঠিক আগের দিন ২৯ জানুয়ারি আবার আদালত নির্বাচনের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করে পুনঃ তফসিলের মাধ্যমে নির্বাচনের আদেশ দেন। সে অনুযায়ী তৃতীয় দফায় ৩১ মার্চ নির্বাচনের নতুন দিন ধার্য করা হয়।

সুজানগর পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রেজাউল কমির। বিএনপি প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যহার করায় তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নতুন তফসিল ঘোষণার পর মেয়র পদে দুজন ও কাউন্সিলর পদে ৪২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল করিম রেজা এবং বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সাবেক মেয়র ও পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুল হুদা কামাল বিশ্বাসের মনোনয়নপত্র চূড়ান্ত বলে গণ্য হয়। কিন্তু মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে বিএনপির প্রার্থী কামরুল হুদা বিশ্বাস তাঁর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। এতে মেয়র পদে মাত্র একজন প্রার্থী থাকায় তাঁর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আগামীকাল মঙ্গলবার প্রতীক বরাদ্দ দিন ধার্য আছে। এদিন আর কোনো জটিলতা না থাকলে তাঁকে বেসরকারিভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হবে। অন্যদিকে পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৯ জন ও কাউন্সিলর পদে ৪১ জন প্রার্থী থাকায় এসব পদে ভোট গ্রহণ হবে।

জানতে চাইলে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী কামরুল হুদা কামাল বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, ‘দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মনোনয়ন জমা দিয়েছিলাম। দলীয় সিদ্ধান্তেই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছি। আর কিছু বলার নেই।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. রওশন আলী বলেন, ‘নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা নির্বাচনের সব প্রস্তুতি নিয়েছি। মেয়র পদে ভোট না হলেও ১৬ মার্চ প্রতীক বরাদ্দর মধ্য দিয়ে কাউন্সিলর পদে ভোটের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে।’

পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার রয়েছেন ২০ হাজার ৪৮৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১০ হাজার ২৬১ জন এবং নারী ভোটার ১০ হাজার ২২৩ জন। ৩১ মার্চ ৯ ওয়ার্ডের ১০টি ভোট কেন্দ্রের ৫৮টি কক্ষে তাঁরা ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।