সীমান্তে হত্যা বন্ধের দাবিতে হানিফ বাংলাদেশীর কুড়িগ্রাম পদযাত্রা । ২১ সেপ্টেম্বর তিনি বগুড়া পৌঁছান
সীমান্তে হত্যা বন্ধের দাবিতে হানিফ বাংলাদেশীর কুড়িগ্রাম পদযাত্রা । ২১ সেপ্টেম্বর তিনি বগুড়া পৌঁছান

প্রতীকী লাশ নিয়ে ‘হানিফ বাংলাদেশি’ এখন বগুড়ায়

সীমান্ত হত্যা বন্ধের দাবিতে প্রতীকী লাশ নিয়ে ঢাকা থেকে কুড়িগ্রামের অনন্তপুর সীমান্ত অভিমুখে একক পদযাত্রায় বের হওয়া মোহাম্মদ হানিফ ওরফে ‘হানিফ বাংলাদেশি’ (৩৯) বগুড়ায় পৌঁছেছেন। আজ সোমবার দুপুরে তিনি বগুড়ায় পৌঁছান।

গত শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে প্রতীকী লাশ নিয়ে তিনি এ পদযাত্রা কর্মসূচি শুরু করেন। ৩০ সেপ্টেম্বর কুড়িগ্রামের অনন্তপুর সীমান্তে গিয়ে এ পদযাত্রা শেষ হবে বলে জানিয়েছেন হানিফ বাংলাদেশি।

হানিফ বাংলাদেশি প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশ-ভারত প্রতিবেশী ও বন্ধুপ্রতিম দেশ। ভারতের কাছে মানবিক আচরণ বাংলাদেশ প্রত্যাশা করে। কিন্তু ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) প্রতিনিয়ত নিরীহ বাংলাদেশিদের গুলি করে হত্যা করছে। কেউ চোরাকারবারি হলে আইনের আওতায় বিচার করা যেতে পারে, কিন্তু সীমান্তে গুলি করে হত্যা মানবতার চরম লঙ্ঘন। বর্তমান সরকার সীমান্তে হত্যা বন্ধে দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।

হানিফ বাংলাদেশি আরও বলেন, স্বাধীনতার পর ৫০ বছরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী প্রায় ৩ হাজার বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা করেছে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে এ পর্যন্ত ১ হাজার ২৬৩ জন বাংলাদেশিকে হত্যা করা হয়েছে। এ জন্য তিনি শাসক দলগুলোর দুর্বল ও নতজানু পররাষ্ট্রনীতিকে দায়ী করেন। তিনি মনে করেন, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হত্যাযজ্ঞ বন্ধে বহুমাত্রিক কূটনৈতিক তৎপরতা চালাতে হবে।

কুড়িগ্রামের অনন্তপুরে অভিমুখে পদযাত্রা প্রসঙ্গে হানিফ বলেন, ভারতীয় সীমান্তরক্ষীদের হাতে কুড়িগ্রামের ফেলানী হত্যা বিশ্ববিবেককে স্তব্ধ করে দিলেও ভারত এখনো সীমান্তে হত্যা থেকে সরে আসেনি। এ কারণে প্রতীকী লাশ নিয়ে অনন্তপুর সীমান্ত অভিমুখে পদযাত্রা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।

এর আগে ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় নির্বাচনকালীন নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল ও নির্বিঘ্ন ভোটের পরিবেশ সৃষ্টির দাবিতে ‘টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া’ পর্যন্ত ১ হাজার ৪ কিলোমিটার একক পদযাত্রা করেন মোহাম্মদ হানিফ।

গত বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে ‌‘জাগাও বিবেক, জাগ্রত করো মানবতা’ স্লোগান নিয়ে ঘুষ, দুর্নীতি ও নৈতিক অবক্ষয়ের প্রতিবাদে ৫৬ হাজার বর্গমাইল প্রদক্ষিণ এবং ৬৪ জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি ছাড়াও ঘুষ-দুর্নীতিবিরোধী প্রচারাভিযান চালান।

রাজধানীতে গণশৌচাগার স্থাপন আন্দোলন ছাড়াও অনাকাঙ্ক্ষিত মানবভ্রূণ হত্যা বন্ধের দাবিতে মানুষকে সচেতন করে আলোচিত হয়েছিলেন। এ ছাড়া গত বছরের ডিসেম্বরে সুবর্ণচরে গৃহবধূ ধর্ষণের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছিলেন।

হানিফ জানান, তাঁর বাড়ি নোয়াখালীর সুধারাম উপজেলার নিয়াজপুর ইউনিয়নের জাহানাবাদ গ্রামে। নোয়াখালী বুলুয়া ডিগ্রি কলেজ থেকে ১৯৯৯ সালে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন তিনি।