মারধরের মামলায় প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গিয়ে আদালতে ভুয়া এক্স-রে রিপোর্ট জমা দিয়েছিলেন বাদী জালাল মিয়া। কিন্তু ভুয়া রিপোর্ট দেওয়ায় এখন নিজেই ফেঁসে গেলেন। রিপোর্ট ভুয়া প্রমাণিত হওয়ায় বাদীর বিরুদ্ধে থানায় নিয়মিত মামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার বিকেলে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও আমলি আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসাইন এ আদেশ দেন।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর মারধর করে গুরুতর জখম করার অভিযোগে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায় জালাল মিয়া আদালতে মামলা করেন। মামলায় একই এলাকার মো. বিল্লাল মিয়াসহ কয়েকজনকে আসামি করা হয়। এ সময় তিনি স্থানীয় একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের এক্স-রে রিপোর্ট আদালতে দাখিল করেন। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, জালাল মিয়া চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা গ্রহণকালে চিকিৎসক তাঁকে এক্স-রে করার পরামর্শ দিলে তিনি হবিগঞ্জ শহরের কনসালট্যান্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এক্স-রে করান।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ওই এক্স-রে রিপোর্টের সত্যতা চ্যালেঞ্জ করেন মামলার আসামি মো. বিল্লাল মিয়া। তিনি একই বছরের ১৪ অক্টোবর আদালতে অভিযোগ করেন, ওই এক্স-রে রিপোর্ট ভুয়া। আদালত একই দিন জালাল মিয়ার দাখিল করা এক্স-রে রিপোর্টটি তদন্তের নির্দেশ দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও চুনারুঘাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আল্লামা ইকবাল কবিরকে। তিনি তদন্ত করে দেখেন, আদালতে জমা দেওয়া রিপোর্টটি ভুয়া। ৩ মার্চ তিনি এ–সংক্রান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন। আদালত যাবতীয় কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখতে পান, জালাল মিয়া কনসালট্যান্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কোনো এক্স-রে করেননি।
আজ বিকেলে আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসাইন এক আদেশে মামলার বাদী জালাল মিয়ার বিরুদ্ধে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুক আলীকে একটি নিয়মিত মামলা করার আদেশ দেন। আদেশ পাওয়ার তিন দিনের মধ্যে মামলার নির্দেশ দেওয়া হয়।
জানতে চাইলে ওসি মাসুক আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আদালতের আদেশের বিষয়টি এখনো হাতে পাইনি। আদালতের আদেশসংক্রান্ত চিঠি পৌঁছালে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’