শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়

পুলিশের মামলায় আসামি শিক্ষার্থীরা, অভিযোগ ‘গুলি ও পুলিশকে হত্যাচেষ্টার’

পুলিশ লাঠিপেটা ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়
ফাইল ছবি

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অজ্ঞাতনামা ২০০ থেকে ৩০০ শিক্ষার্থীকে আসামি করে জালালাবাদ থানায় পুলিশ একটি মামলা করেছে। মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশের কর্তব্যকাজে বাধা দেওয়া, ককটেল বিস্ফোরণ, গুলিবর্ষণ ও পুলিশকে হত্যার উদ্দেশে মারধরের অভিযোগ আনা হয়েছে।

গতকাল সোমবার রাত সাড়ে আটটার দিকে জালালাবাদ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আবদুল হান্নান মামলাটি করেন।

তবে এই মামলায় কোনো শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখ করা হয়নি জানিয়ে মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) মো. আজবাহার আলী শেখ প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ মামলায় কাউকে হয়রানি করা হবে না। তাই কারও উত্তেজনার কিছু নেই। শিক্ষার্থীদের ধরপাকড়ও করা হচ্ছে না। সে দিন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের অস্ত্র-গুলি গেছে, পুলিশ সদস্যরা আহত হয়েছেন, এগুলোর জাস্টিফিকেশন আছে। সে কারণেই মামলাটি করতে হয়েছে। তবে মামলায় কারও নামও যায়নি, এজাহারেও কারও নাম, ঘটনার বর্ণনা—কিছুই নেই।’

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে অবরুদ্ধ করার ঘটনা ঘটে। গত রোববার বেলা সাড়ে পাঁচটার দিকে পুলিশের কর্তব্যকাজে শিক্ষার্থীরা বাধা দেয়।

এজাহারে ঘটনার বর্ণনায় লেখা হয়েছে, ‘২০০ থেকে ৩০০ উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থী হঠাৎ কর্তব্যরত পুলিশের কাজে বাধা দিয়ে পুলিশের ওপর চড়াও হন। কর্তব্যরত পুলিশের সরকারি আগ্নেয়াস্ত্র ধরে টানাটানি করে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। তাঁরা বৃষ্টির মতো ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করাসহ পুলিশকে উদ্দেশ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশের ওপর ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ক্যাম্পাসে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এরপর পুলিশ ঘটনা নিয়ন্ত্রণে ৩১টি শটগানের গুলি এবং ২১টি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে।’

জালালাবাদ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবু খালেদ মামুন মামলাটি গ্রহণ করে তদন্তের জন্য থানার এসআই মো. আসাদুজ্জামানকে দায়িত্ব দিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের (লিজা) বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তিন দফা দাবিতে গত বৃহস্পতিবার রাতে হলের কয়েক শ ছাত্রী আন্দোলনের সূচনা করেন। গত রোববার অবরুদ্ধ উপাচার্যকে মুক্ত করতে শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটার পাশাপাশি শটগানের গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে পুলিশ। ওই দিন রাত সাড়ে আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান উপাচার্য। তবে শিক্ষার্থীরা এ সিদ্ধান্ত না মেনে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করছেন।