দীর্ঘদিন খনন না করায় দিঘিটির গভীরতা কমে গিয়েছিল। এ জন্য নতুন করে আবার খনন শুরু হয়। এ কাজ করতে গিয়ে মিলেছে মৃৎপাত্রের টুকরা, পোড়ামাটির তৈজসপত্র, মাটির প্রদীপসহ পোড়ামাটির তৈরি মানবমূর্তি।
ঘটনাটি যশোরের ঝিকরগাছার শঙ্করপুর ইউনিয়নের নায়ড়া গ্রামে। স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, ৩০ বছর আগে দিঘি খননের সময় এমন কিছু পাওয়া যায়নি। এত বছর পর খননযন্ত্র দিয়ে দিঘিটি খননের সময় এসব সামগ্রী উঠে আসছে।
তবে এসব সামগ্রী প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত করতে পারেননি কেউ। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বা প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তরের কেউ এখনো (গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত) সরেজমিন এসব সামগ্রী দেখেননি।
গত মঙ্গলবার দুপুরে নায়ড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, নায়ড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও এনইউআরএস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পেছনে দিঘিটির অবস্থান। উত্তর পাশে দুটি খননযন্ত্র দিয়ে সাত ফুট গভীর করে দিঘির খননকাজ চলছে।
এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, এই দিঘি প্রথম খননের ইতিহাস তাঁরা জানেন না। তবে এলাকায় জনশ্রুতি আছে, শেরশাহের আমলে খাওয়ার পানির সংকট ছিল। দূষিত পানি পান করে এলাকায় এক ধরনের রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। ওই সময় বিশুদ্ধ পানির জন্য দিঘিটি খনন করা হয়।
নায়ড়া গ্রামের খন্দকার বংশের লোকজন উত্তরাধিকার সূত্রে দিঘিটি ভোগদখল করে আসছেন। দিঘিটির আয়তন ২৫ বিঘা। খননকাজ তদারকি করছেন খন্দকার আহাদুজ্জোহা রুবেল। তিনি বলেন, গত ২০ এপ্রিল থেকে খননকাজ শুরু হয়েছে। ৫ জুন প্রায় সাত ফুট খননের পর কিছু সামগ্রী পাওয়া যায়। এরপর আরও কয়েক দিন খননের সময় এগুলো মিলেছে।
আহাদুজ্জোহা বলেন, এসব সামগ্রী তিনি বাড়িতে রাখছেন। ভবিষ্যতে দিঘিরপাড়ে একটি সংগ্রহশালা তৈরি করা হবে। তখন এগুলো সেখানে রাখবেন।
সামগ্রী উদ্ধারের বিষয়ে ঝিকরগাছা ইউএনও মাহবুবুল হক বলেন, বিষয়টি তাঁকে কেউ জানাননি। তবে দ্রুত গ্রামটিতে গিয়ে এ ব্যাপারে খোঁজ নেবেন।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের খুলনার আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরিচালক আফরোজা খান গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, তিনিও আগে জানতেন না। সামগ্রীগুলো প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হলে সেভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।