দেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্পে আরেকটি মাইলফলক অর্জন করতে যাচ্ছে খুলনা শিপইয়ার্ড। দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ৭০ টন বোলার্ড পুল বিশিষ্ট দুটি টাগ বোট নির্মাণ করবে প্রতিষ্ঠানটি। কাজ শেষ হলে এটাই হবে বাংলাদেশে এ যাবতকালে নির্মিত সবচেয়ে বেশি বোলার্ড পুল ক্ষমতার টাগবোট। টাগবোট দুটি নির্মাণ করা হচ্ছে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের জন্য।
খুলনা শিপইয়ার্ডে সোমবার দুপুরে ওই টাগবোট দুটির কাজ উদ্বোধন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় অবস্থিত পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল। তিনি বলেন, দক্ষিণাঞ্চল তথা দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের কথা চিন্তা করে সরকার পায়রা বন্দর স্থাপন করেছে। পায়রা বন্দরের মাধ্যমে এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হতে শুরু করেছে। অচিরেই এটি দেশের আমদানি-রপ্তানির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবে। এই বন্দরকে কেন্দ্র করে এ অঞ্চলে প্রচুর দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আসছে।
খুলনা শিপইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর এম সামছুল আজিজের সভাপতিত্বে কিল লেয়িং অনুষ্ঠানে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার অ্যান্ড মেরিন) কমোডর এম মামুনুর রশীদসহ শিপইয়ার্ডের ঊর্ধ্বতন সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সর্বাধুনিক প্রযুক্তিসমৃদ্ধ টাগবোট দুটিতে অত্যাধুনিক মেশিনারিজ ও যন্ত্রপাতি সংযোজন করা হবে। এটা আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমায় ও বন্দরে যাতায়াত করতে সক্ষম। টাগবোটগুলো বন্দরে আগত যেকোনো জাহাজের বার্থিং, আন বার্থিং, পুশ, পুল অপারেশন ছাড়াও ফায়ার ফাইটিং ও অন্য জাহাজের দুর্ঘটনাকালীন সহযোগিতায় ব্যবহার করা যাবে। বোট দুটি বন্দরের মাদার ভেসেল নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনাসহ বিভিন্ন অফশোর সাপোর্ট কাজ করতে সক্ষম হবে, যা বন্দরের সক্ষমতা বহুগুণ বৃদ্ধি করবে। এ ছাড়া পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষকে একটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন বন্দরে পরিণত করতে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে। এই দুটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪১ কোটি টাকা।
এর আগে ২০১৫ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য একটি যুদ্ধজাহাজ নির্মাণ করে খুলনা শিপইয়ার্ড। এ ছাড়া চলতি মাসে কোস্টগার্ডের জন্য দুটি টাগবোট ও ছয়টি উচ্চ গতির নৌযান নির্মাণ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।