পাবনার চাটমোহর পৌরসভা নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরুর দুই ঘণ্টা পরই কেন্দ্র থেকে এজেন্ট বের করে দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে দুই প্রার্থী ভোট বর্জনের ডাক দিয়েছেন। তাঁরা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছিলেন। বিএনপির প্রার্থী ভোটকেন্দ্রে অনিয়মের অভিযোগ তুললেও ভোট বর্জনের কোনো সিদ্ধান্ত জানাননি।
ভোট বর্জন করা দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন বর্তমান মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মির্জা রেজাউল করিম এবং বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান।
অন্যদের মধ্যে নির্বাচনে লড়ছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাখোয়াত হোসেন এবং বিএনপির প্রার্থী পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মো. আসাদুজ্জামান।
সকাল নয়টার দিকে চাটমোহর পৌর সদরের সবুজ সংঘ ক্লাবের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন আবদুল মান্নান। তাঁর প্রতীক ছিল মোবাইল ফোন। সকাল ১০টার দিকে পৌর এলাকার ছোট শালিখা মহল্লায় নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন মির্জা রেজাউল করিম। তাঁর প্রতীক ছিল জগ।
দুই প্রার্থী অভিযোগ করেন, সকালে ভোট গ্রহণ শুরুর পর আওয়ামী লীগের এজেন্ট ও কর্মীরা অন্য প্রার্থীর এজেন্টদের মারধর করে বের করে দেন। এ ছাড়া সব ভোটকেন্দ্র দখলে নিয়ে নেন। বুথে ইভিএমের গোপন কক্ষে নৌকার এজেন্টরা ফিঙ্গারপ্রিন্ট দেওয়ার পর ভোটারদের জোর করে নৌকায় ভোট দিতে বাধ্য করছেন। বিষয়টি নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনকে জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি। ফলে তাঁরা বাধ্য হয়ে ভোট বর্জন করছেন বলে জানান।
ভোট গ্রহণ শুরুর পর সকাল ৯টায় পৌর এলাকার আফ্রাতপাড়া কেন্দ্র ও চাটমোহর ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, ভোটাররা কেন্দ্রে আসতে শুরু করেছেন। তবে অপেক্ষাকৃত কম। অন্যদিকে ভেতরে শুধু নৌকা প্রতীকের এজেন্টরা আছেন। অন্য কোনো প্রার্থীর এজেন্ট নেই।
এ প্রসঙ্গে বিএনপির প্রার্থী আসাদুজ্জামান অপর দুই প্রার্থীর মতোই অভিযোগ তোলেন। তবে তিনি বলেন, ‘যত অনিয়মই হোক, আমরা ভোট করার জন্য নির্বাচনে এসেছি। শেষ পর্যন্ত ভোট কেমন হয়, দেখতে চাই।’
আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাখোয়াত হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন পৌরবাসী উন্নয়ন থেকে অবহেলিত। ফলে উন্নয়নের স্বার্থে পৌরসভার সর্বস্তরের মানুষ নৌকার পক্ষে কাজ করছেন। এতে নির্বাচনে নিশ্চিত পরাজয় বুঝতে পেরে অন্য প্রার্থীরা মিথ্যা অভিযোগ করছেন। কোনো কেন্দ্র থেকে কোনো এজেন্ট বের করা হয়নি। তাঁরা নিজেরাই হয়তো কেন্দ্রে আসেননি।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলার জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘ভোট বর্জনের খবর আমার জানা নেই। তবে নির্বাচনের পরিবেশ ভালো আছে। ভোটাররা ভোট দিচ্ছেন। কোনো অভিযোগ পেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ভোটকেন্দ্র দখলের অভিযোগ সঠিক নয়।’
পৌরসভায় মোট ১২ হাজার ২৩৭ জন ভোটার আছেন। মেয়র পদে ৪ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৬ জন ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১১ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।