বরগুনার পাথরঘাটায় বিয়ের দাবিতে বাবা নিরঞ্জন চন্দ্র শীলের (৬৫) সঙ্গে তর্কের একপর্যায়ে টেবিলের পায়া দিয়ে আঘাত করেন ছেলে নেপাল চন্দ্র শীল (৩০)। উপজেলার হাতেমপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় নিরঞ্জন চন্দ্রকে দ্রুত নেওয়া হয় হাসপাতালে। বেলা একটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পাথরঘাটা হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ছেলে নেপাল চন্দ্র শীল ও তাঁর ফুপাতো বোনের স্বামী লিটন চন্দ্র শীলকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহত নিরঞ্জন চন্দ্র শীল (৬৫) বরগুনার পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের হাতেমপুর গ্রামের মৃত গোপাল চন্দ্র শীলের ছেলে। ঘটনাটি নিশ্চিত করে পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবুল বাশার প্রথম আলোকে বলেন, ছেলের হামলায় বাবা মাথায় গুরুতর আঘাত পান। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় নিহত নিরঞ্জনের স্ত্রী রাধা রানী ও মেয়ে হাসি রানীর মৌখিক অভিযোগে দুজনকে আটক করা হয়েছে।
বাবা নিরঞ্জন চন্দ্র শীল বিয়ে ও জমি লিখে দেওয়ার ব্যাপারে অগ্রসর না হওয়ায় আজ সকালে নেপালের সঙ্গে তর্কবিতর্ক হয়।
থানা–পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নেপাল চন্দ্র শীল আজ সকাল ৮টার দিকে তাঁর বাবা নিরঞ্জন চন্দ্র শীলের কাছে বিয়ে করিয়ে দেওয়ার দাবি করেন। এর আগে বেশ কয়েক বছর ধরে বিয়ের দাবি করে আসছিলেন নেপাল, এ জন্য জমি লিখে চাচ্ছিলেন। তবে বাবা নিরঞ্জন চন্দ্র শীল বিয়ে ও জমি লিখে দেওয়ার ব্যাপারে অগ্রসর না হওয়ায় আজ সকালে নেপালের সঙ্গে তর্কবিতর্ক হয়। একপর্যায়ে নেপাল টেবিলের একটি পায়া হাতে নিয়ে বাবা নিরঞ্জন চন্দ্র শীলের মাথায় আঘাত করেন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পাথরঘাটা হাসপাতালে বেলা একটার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।
লাশ উদ্ধার করে পাথরঘাটা থানায় নেওয়া হয়েছে। লাশের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। এ ঘটনায় হত্যা মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
নিহতের স্ত্রী রাধা রানী কাঁদতে কাঁদতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘মোর পোলা নেপাল বোগদা টাইপের। হেরে বিয়া হরাই না ক্যা, হ্যার লইগা বাপেরে সকালে পিডাইতে নামছে। ঘরে মুই দুইজনার বাজাবাজি ছাড়াইতে পারি না। পরে মোর সামনে মোর স্বামীর মাথা পাচাইয়া লাঠি দিয়ে পিঠান মারছে। ওই পিডানেই হে পইড়া গেছে। পরে হেরে লইয়া হাসপাতলে আইছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার সৎননদ বিউটি রানীর পরামর্শে নেপাল ওর বাবার সঙ্গে ঝগড়াঝাটি করতেছিল। বিউটি নেপালকে বলেছে, “তুমি তোমার বাবার কাছ থেকে জমি লেখাইয়া নাও, তবে তোমাকে বিবাহ করিয়া দেব।” তাই নেপাল ওর বাবার কাছ থেকে জমি লিখিয়ে নেওয়ার জন্য বারবার চাপ দিয়ে আসছিল। বিবাহ করার জন্যই নেপাল এসব করে আসছে।’