কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে চতুর্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গিয়ে বিজয়ী প্রার্থী হামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় ভাঙচুর করা হয়েছে বেশ কয়েকটি ঘর।
আজ সোমবার সকালে উপজেলার মুমুরদিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিজয়ী সদস্য জামাল মিয়া ও পরাজিত প্রার্থী জাহাঙ্গীর হোসেনের সমর্থকদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। আহত ব্যক্তিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে বিজয়ী প্রার্থীর সমর্থক রফিক মিয়া, বিল্লাল হোসেন ও কালাম মিয়ার অবস্থা গুরুতর।
স্থানীয় লোকজন জানান, গতকাল রোববার কটিয়াদীর ৯টি ইউনিয়নে একযোগে ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৫ নম্বর ওয়ার্ডে জাহাঙ্গীর হোসেন ও জামাল মিয়া সদস্যপদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ভোটে জামাল জয়ী হন। নির্বাচনের শুরু থেকেই তাঁদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। আজ সকাল ৮টার দিকে কর্মী–সমর্থকদের নিয়ে দক্ষিণ মুমুরদিয়া গ্রামে জাহাঙ্গীরের বাড়িতে যান জামাল মিয়া। উদ্দেশ্য নির্বাচন–পরবর্তী সৌজন্য সাক্ষাৎ করা। তবে কর্মী–সমর্থকদের নিয়ে বাড়িতে প্রবেশের বিষয়টি ভালোভাবে নেননি জাহাঙ্গীরের সমর্থকেরা। তাঁদের ধারণা, সৌজন্যতার নামে ‘কাটা গায়ে নুনের ছিটা’ দিতে এসেছেন জামাল ও তাঁর লোকজন। এরপর জয়–পরাজয়ের বিষয় নিয়ে কথা–কাটাকাটির একপর্যায়ে জাহাঙ্গীরের সমর্থকেরা জামালের লোকজনের ওপর হামলা চালান। হামলায় জামাল মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হন। এ খবর পেয়ে জামালের লোকজন এগিয়ে এলে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে জামালের পক্ষের ১৫ জন এবং জাহাঙ্গীরের পক্ষের রয়েছে ৫ জন আহত হন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
জামাল মিয়া বলেন, ‘নির্বাচনের সময় আমাদের মধ্যে উত্তেজনা ছিল। ভোটের রাজনীতিতে আমরা একে–অপরের প্রতিপক্ষ ছিলাম। জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে ওয়ার্ডের মেম্বার নির্বাচিত করেছেন। এখন আমি জাহাঙ্গীরেরও মেম্বার। ফলে মনে হয়েছে, তাঁর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে আসি। সে জন্যই বাড়িতে গিয়েছিলাম। কিন্তু বাড়িতে গিয়ে উপহার পেলাম হামলা।’
তবে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেন জাহাঙ্গীর। তিনি বলেন, ‘জয় পাওয়ার পর থেকে নানা কৌশলে উসকানি দিয়ে আসছিলেন জামালের লোকজন। সকালে জামাল মূলত আমার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে আসেননি। এসেছেন বিবাদে জড়াতে। তা না হলে দলবলসহ মিছিল নিয়ে আসার কথা ছিল না। হাতে লাঠিসোঁটাও থাকার কথা নয়। মূলত সংঘর্ষের সূত্রপাত করেছেন জামালের লোকজনই।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শোয়েব খান বলেন, দুপক্ষের সংঘর্ষে আহত ব্যক্তিদের মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছেন ১৪ জন।
সংঘর্ষের খবর পেয়ে কটিয়াদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম শাহাদাৎ হোসেন ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি বলেন, জয়–পরাজয়ের উত্তেজনা থেকে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এখন পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে।