বরিশাল সদর উপজেলায় মেয়েকে হত্যার অভিযোগে এক গৃহবধূকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার রাতে ওই নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযুক্ত লিপি আক্তার সদর উপজেলার শায়েস্তাবাদ ইউনিয়নের ছোট রাজাপুর গ্রামের জেলে সোহরাব হাওলাদারের স্ত্রী। আজ শনিবার বিকেলে বরিশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আল ফয়সালের আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি স্বীকার করেছেন তিনি।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ২৭ মে লিপি আক্তারের মেয়ে তন্নী আক্তার (১৩) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে থানায় অভিযোগ দেন তিনি। ওই দিন বিকেলে লাশ উদ্ধার করে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ। লাশ উদ্ধারের সময় তন্নীর গলায় আঘাতের চিহ্ন ছিল, নাক ও কান দিয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। এতে ওই শিশুর মৃত্যু নিয়ে শুরু থেকেই পুলিশের সন্দেহ ছিল। পরে এ ঘটনায় কাউনিয়া থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউনিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সগির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সন্দেহের সূত্র ধরে বিষয়টির তদন্ত শুরু করে পুলিশ। একপর্যায়ে তাঁরা নিশ্চিত হন তন্নী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেনি, তাকে শ্বাস রোধ করে হত্যার পর ওড়না গলায় বেঁধে লাশ ঘরের সিলিংয়ে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ কাজে অংশ নেন তন্নীর মা লিপি আক্তার এবং তাঁর কথিত প্রেমিক কবির খান। এরপর শুক্রবার রাতে লিপি আক্তারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।
লিপি আক্তারের বক্তব্যের বরাত দিয়ে পরিদর্শক সগির হোসেন বলেন, লিপি আক্তারের সঙ্গে একই এলাকার কবির খানের পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। ২৭ মে দুপুরে লিপি আক্তার ও কবির খানকে ঘরের মধ্যে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখে তন্নী। বিষয়টি বাবাকে জানাবে বললে লিপি আক্তার ও কবির খান তন্নীকে শ্বাস রোধ করে হত্যা করেন। এরপর লাশ ওড়না দিয়ে ঝুলিয়ে রাখেন। ঘটনার পর থেকে কবির খান পলাতক। এ ঘটনায় তন্নীর বাবা সোহরাব হাওলাদার বাদী হয়ে কাউনিয়া থানায় হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় তিনজনকে আসামি করা হয়েছে।